খালেদা জিয়াকে বাড়িছাড়া করেছিলেন আর জনগণ আপনাকে দেশছাড়া করেছে : আলাল
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৮, আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৯
বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়িছাড়া করেছিলেন আর জনগণ আপনাকে (শেখ হাসিনা) দেশ ছাড়া করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও পাবেন না, কোনো রাজনৈতিক দল টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে একটা গণঅভ্যুত্থানে সমস্ত সহযোগীরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়িছাড়া করেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে দেশছাড়া করেছে।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক ছাত্রনেতা জাকির খানসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদ এর আয়োজন করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমাদের নামে যে অজস্র মিথ্যা মামলা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা রয়েছে, সেই মামলাগুলোকে তুলে নেয়ার জন্য আপনারা এখন দাবাড়ুদের মতো দাবার গুটি সাজিয়েছেন। এটা হলে ওইটা হবে, আর ওইটা হলে এটা হবে। এটা তো ন্যায়বিচার নয়। ন্যায়বিচার হলো জাস্টিস। আমরা এ সরকারের কাছে জাস্টিস চাই, ন্যায়বিচার চাই।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে যে অজস্র মামলা রয়েছে, সে মামলাগুলো এখনো কেন তুলে নেয়া হচ্ছে না? যে মামলাগুলোতে আমাদের সাজা দেয়া হয়েছে, সে মামলাগুলোর তথ্য প্রমাণ কোনকিছুই পাওয়া যায়নি। যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান নিজেই। বেগম খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে নিয়েছেন, এই অপরাধের কারণে যে জজ বেগম জিয়াকে ১২ বছরের সাজা দিয়েছে, সেই জজকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রমোশন দিয়ে বিচারপতি বানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, গোটা বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে বিচারপতি খায়রুল হক এবং ওবায়দুল হাসানকে ব্যবহার করে মানুষের ন্যায্য অধিকার, ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) প্রধানরাও স্বীকার করছেন।
বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, গতকাল একজন উপদেষ্টা মারা গেছেন। তিনি আইনের দিক থেকে একজন বিজ্ঞ মানুষ ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি আইনের ব্যাখ্যায় অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু, বাস্তবে তার প্রয়োগ আমরা এখনো দেখিনি। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ নজরুল আছেন। আইনের একজন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি সম্মানিত জায়গায় তিনি আছেন। তার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত আশা করে। ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত দেখাতে হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের মামলাগুলো যেভাবে একে একে আইনের দৃষ্টিতে বাতিল হয়ে যাচ্ছে, একইসাথে আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর এবং জাকির খানের মামলাগুলো বাতিল হওয়া উচিত। আপনার (আসিফ নজরুল) কাছে সুনির্দিষ্টভাবে আমরা এটা দাবি করছি। আপনি আসিফ নজরুল নিজেকে যত বড় মনে করেন না কেন, আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বাংলাদেশে যারা জনগণের রোষানলে পড়ে দেশের শাসন ব্যবস্থা থেকে পালিয়ে গেছেন, সেই পালিয়ে যাওয়া বাহিনীর কাছে যদি আমরা আর্তনাদ করে বলি, ফিরিয়ে দাও আমাদের ১৬টি বছর, এতে কোনো লাভ হবে না। কারণ তাদের এখন দেয়ার কিছু নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) বরং বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে নিতে চায়। কিন্তু যাদের দেয়ার আছে, যারা সব শ্রেণির মানুষের সমর্থন নিয়ে আজকে দেশ পরিচালনা করছেন, তারা একটা জায়গায় গিয়ে সবচেয়ে বড় হোঁচট খেয়েছেন। সেটা হচ্ছে, দ্রব্য মূল্যের দাম কমাতে না পারা। সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন করে বলে, আগে সংসার না কি সংস্কার। কারণ মানুষের এখন সংসারই তো চলছে না। প্রতিটি জিনিসের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে সংস্কার নিয়ে জনগণের কোনো মাথাব্যথা নেই।
তিনি বলেন, আজকে সংস্কার বা অন্য কোনো অজুহাত দেখিয়ে দিনের পর দিন মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কোনো যুক্তি আপনারা খুঁজে বের করতে পারবেন না। যদি তাই হয়, তাহলে আবারো বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের জেলায় জেলায় যেতে হবে এবং বিভাগে বিভাগে সমাবেশ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জীবন ধারণের জন্য সামান্য জিনিস কেনার ক্ষমতা কেন নেই। বাজার সিন্ডিকেট কেন ভাঙতে পারছেন না। কেন কালোবাজারি মজুমদারদের ধরতে পারছেন না। কেন সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারছেন না। বাংলাদেশের মানুষের সাহস এবং বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে যে রায় আপনাদের পক্ষে দেয়া হয়েছে, সে রায় যথাযথ বাস্তবায়ন কেন করতে পারছেন না। কোথায় সমস্যা।