ক্ষমতায় যেতে চাইলে কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ মানতে হবে : মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:০৩
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ‘আগামী দিনে যারা ক্ষমতায় যেতে চান তাদেরকে এ বলে জনগণের কাছে অঙ্গীকার করতে হবে, তারা কোরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আগস্ট বিপ্লবীরা জাতীয় বীর ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা দেশ ও জাতির জন্য জীবন দিয়েছেন। অনেকেই হাত-পা, চোখ-কানসহ নানাভাবে বিকলাঙ্গ হয়েছেন। কেউ কেউ গুরতর আহত হয়ে চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। তাই তাদের চিকিৎসার জন্য দেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে শুধুমাত্র আগস্ট বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন হলে এবং চাইলে জনগণ অর্থ দিয়ে সরকারকে সাহায্য করবে।’
শুক্রবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও খেলাঘর মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদির সভাপতিত্বে এবং নায়েবে আমির এস এম মনির আহমেদ ও সেক্রেটারি ফরিদ আহমেদ রুবেলের যৌথ সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েত হোসেন, প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম, আব্দুল হক, আলী আকবর হোসেন, শ্রমিক নেতা শফিকুল ইসলাম, তেজগাঁও কলেজ শিবির সভাপতি ইজাজ আহমেদ ও তেজগাঁও থানা সভাপতি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারমুক্ত হলেও আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এখনো শেষ হয়নি, বরং আমাদের যাত্রা মাত্র শুরু হয়েছে। আমাদের এখন প্রথম কাজ হলো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ-বিশ্বাস, তাহজীব-তামুদ্দন, ঈমান-আকিদার ভিত্তিতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা। স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের পরিবারগুলোকে যথাযথ মূল্যায়ন এবং সম্মানিত করতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অন্তর্বর্তী সরকার আগস্ট বিপ্লবীদের তালিকা এখনো প্রকাশ করতে পারেনি। আমরা ইতোমধ্যেই পাঁচ খণ্ডে শহীদদের তালিকা ও তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য প্রকাশ করেছি। কিন্তু সরকার তা করতে পারেনি। তিনি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই আগস্ট বিপ্লবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় ব্যর্থতার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’
মহানগরী আমির বলেন, ‘আওয়ামী-বাকশালী শাসনের প্রায় ১৬ বছর দেশকে গুম-খুনের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল। তাই খুনীদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে সম্যক ধারণা দিতে হবে। আগস্ট বিপ্লবের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্নীতি, গুম, খুন, অর্থপাচারসহ নানা অপকর্ম সম্পর্কে এক শ্রেণির মিডিয়া রহস্যজনকভাবে নিরব। তিনি জনগণকে সত্য জানানোর জন্য গণমাধ্যমগুলোকে আওয়ামী লীগের অপকর্মের প্রতিবেদন প্রকাশ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশ ও জাতির কাছে একদিন তাদেরকে জবাবদিহী করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, ‘জামায়াত তার লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলায় পরিণত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ইনশাআল্লাহ। তিনি আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।’
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাদের প্রাণের বিনিময়েই আমরা উম্মুক্ত স্থানে সমবেত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। তাই জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মানিত করতে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য দেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমাদেরকে নতুন করে শপথ গ্রহণ করতে হবে।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তি