০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`

মুজিবুল হক চুন্নুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার আহ্বান রাশেদ খানের

তাড়াইলে গণঅধিকার পরিষদের তারুণ্যের সমাবেশে - ছবি : নয়া দিগন্ত

গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় তারুণ্যের সমাবেশে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খান।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ৪টায় তাড়াইল বাজার-সংলগ্ন বালুর মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তাড়াইল উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জহিরুল হক।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খান বলেন, ঢাকা থেকে আসতে গিয়ে রাস্তায় যে অবস্থা দেখলাম, এতে মনে হলো উন্নয়নের নামে কিশোরগঞ্জবাসীর সাথে বেইমানি করা হয়েছে। পুরো রাস্তা ভাঙাচোরা, কর্দমাক্ত। যে জেলা থেকে তিনজন রাষ্ট্রপতি হয়েছে, সেই জেলার এই হাল কেন? আপনাদের এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলো জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। সে তো জাতীয় বেইমান। জাতীয় পার্টিকে শেখ হাসিনার দোসর বানিয়েছে। জিএম কাদেরকে ব্লাকমেইল করে আ.লীগের অধীনে নির্বাচনে নিয়ে গিয়েছে। এই বেইমানকে আপনাদের উচিত তাড়াইলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা। আমরা ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি। এরপর দল গঠন করে রাষ্ট্র সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছি। আমরা তো সে ২০২১ সালেই বলেছি, দলীয় প্রধান রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না, দু’বারের বেশি কেউ রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। এই রাষ্ট্র সংস্কারের বাণী পৌঁছে দিতেই আমরা তাড়াইলে এসেছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে দেখেছি দলীয় প্রধান থেকে রাষ্ট্রীয় প্রধান হয়ে গণভবনকে আ.লীগের কার্যালয় বানিয়েছিল, পরপর চারবার ক্ষমতায় থেকে আ.লীগকে কর্তৃত্ববাদী দল বানিয়ে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিল। শেখ হাসিনা তার বাবার সাথে বেইমানি করেছে। দেখেন আপনাদের সামনেই শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙে ঝুলে আছে। শেখ মুজিবকে দেবতা বানাতে গিয়ে জনগণের টাকা অপচয় করে সব জায়গায় ভাস্কর্য বানায় শেখ হাসিনা। কিন্তু শেখ হাসিনা পালানোর পর তার ও তার পরিবারের কোন অস্তিত্ব জনগণ রাখেনি। এতটাই ঘৃণা জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছিল। শেখ হাসিনা গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড।

মো: রাশেদ খান বলেন, আজকে কাউকে কাউকে আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বলা হচ্ছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানে একক কাউকে মাস্টারমাইন্ড বলা মানে অন্যদের অবদান অস্বীকার করা। এই আন্দোলন ছিলো সার্বজনীন আন্দোলন। সকল দল মত পথের মানুষ ছিল। ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই দ্বিতীয় মুক্তি আমরা পেয়েছি। এটাতে আ.লীগের মতো কেউ একক অর্জন মনে করলে, তাদের অবস্থাও আ.লীগের মতো হবে। এখন সময় এসেছে দেশকে গড়ার। কর্তৃক ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে স্বাধীনতাকে কেউ নস্যাৎ করবেন না। আগামীতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির সরকার গঠন করে এই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনে কিশোরগঞ্জে যারা গুলি চালিয়েছে তাদের অনেকেই এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের দ্রুত আটক করতে হবে। আমরা শুনেছি শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে, শেখ হাসিনার ঠিকানা কোনো দেশে নয়, শেখ হাসিনার ঠিকানা হবে তার সৃষ্টি করা আয়না ঘরে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে আগে, তারপর তাদের রাজনীতির চিন্তা। এই তাড়াইলের ছেলে মজিবুল হক চুন্ন হলেন জাতীয় বেঈমান, জাতীয় পার্টিকে গত কয়েক বছরে শেখ হাসিনার দাসে পরিণত করতে সবচেয়ে বেশি সরকারের হয়ে কাজ করেছে চুন্নু। তিনি বিনিময়ে বাড়ি-গাড়িসহ আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন, তাকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। কিশোরগঞ্জে হাওড় এলাকা, এ এলাকার মানুষ কৃষির সাথে জড়িত, গণঅধিকার পরিষদ ক্ষমতায় গেলে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ দেয়া হবে।

দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঐতিহাসিক সমাপ্তি ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার এ অভ্যুত্থান। দীর্ঘ ১৬ বছর শেখ হাসিনার গুম খুন হত্যা নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ এ অভ্যুত্থান। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সাথে গণঅধিকার পরিষদ, বিএনপি, জামাত, ডান বাম সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। এই আন্দোলনের কোনো একক মাস্টারমাইন্ড নেই, তবে এটাও অস্বীকার করার সাধ্য নাই ছাত্র-জনতা ভিপি নুরের কথা রেখে বাকি ১০ পারসেন্ট ধাক্কা দিয়ে সরকার পতন করেছে।

গণঅধিকার পরিষদের তাড়াইল উপজেলার সদস্য সচিব জাকিরুল ইসলাম বাকির সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৈদেশিক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সহ-দপ্তর সম্পাদক মোখলেসুর রহমান উজ্জ্বল প্রমুখ।


প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement