দিনে দিনে বাড়ছে দুর্লভ রুটি ফল গাছ
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪২
বৈজ্ঞানিক কিংবা কোন ভৌতিক কল্প কাহিনী নয়, বাস্তবের রুটি ফল ঝুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ফলটির মূলত এখন প্রধান মৌসুম না হলেও অসংখ্য ছোট ছোট ফল গাছটিতে ঝুলে আছে।
গাছের পাতা দেখতে অনেকটা হাতের পাঞ্জার মতো। গাছটি মাটির নিচ থেকে সামান্য উপরে গিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য শাখায়। প্রায় সবকটি শাখাতে রয়েছে ফল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের আগস্ট এর দিকে এক সেনা কর্মকর্তার হাতধরে গাছটি এখানে স্থান পায়। তখনকার সেনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর তারিক শখের বসে শ্রীলঙ্কা থেকে একটি রুটি ফলের গাছ নিয়ে আসেন। পরে গাছটির সংরক্ষণ ও প্রয়োজনীয়তার তাগিদে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের হাতে তুলে দেন।
অধ্যাপক জসীম উদ্দীন গাছটিকে সযত্নে রোপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটাক্যিাল গার্ডেনে। এই রুটি ফল কার্বোহাইড্রেড হিসেবে গুরুত্ব অনেক বেশি। পাশাপাশি ফলটিতে দশটিরও বেশি ভিটামিন উপাদান রয়েছে। আদর্শ খাদ্য হিসেবে একজন মানুষের যা দরকার তার সবই রয়েছে এই রুটি ফলে। ভাতের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হতে পারে রুটি ফল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব বিল্লাহ বলেন, এই দুর্লভ গাছটি যে আমাদের রয়েছে তা অনেক শিক্ষার্থীই জানেন না। এই ফলের পুষ্টিগুণ, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া দরকার।
তিনি বলেন, রুটি ফল বা ব্রেড ফ্রুটের বীজ যাতে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যায় সে ব্যাপারে সরকার যাতে পদক্ষেপ নেয়। তাতে সহজে পুষ্টিগুণ ও খাদ্য ঘাটতি পুরণে ভূমিকা রাখবে।
রুটিফলের উদ্ভিদ বিজ্ঞানীয় নাম Artocarpus communis । গ্রীক শব্দ আরটস অর্থ রুটি আর কারপাস এর মানে হল ফ্রুট বা ফল। সুতরাং আরটোকারপাস এর মানে দাঁড়াচ্ছে; ব্রেডফ্রুট বা রুটিফল। রুটিফল Moraceae পরিবারের সদস্য। যার বাহারি পাতার অগ্রভাগ হাতের আঙ্গুলের মত চমৎকার নকশা করা। ফল দেখতে ঠিক কাঁঠালের মত। কেউ কেউ কাঁঠাল ভেবে ভুলও করতে পারেন। এই ফলের স্বাদ মিষ্টি আলু বা কলার মত। পার্থক্য রুটি ফল পাউরটির মত স্লাইস করে আগুনে ঝলসে খেতে হয়। একটি রুটিফল গাছ প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। ফল ধরে শাখার অগ্রভাগে। পাখি ধরার ফাঁদ হিসাবে রুটিফল গাছের আঁঠার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
রুপি ফল নিয়ে আছে অনেক কল্প কাহিনী। অনুমান করা হয় ১৪০০ শতকে জলদস্যুদের মাধ্যমে হাওয়াই থেকে পলিনেশিয়ায় রুটিফল ছড়িয়ে পড়ে! এটি প্যাসিফিক অঞ্চলের গাছ। শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, তাহিতি, পলিনেশিয়া, হাওয়াই ও ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জে রুটিফল ভাল জন্মে। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদউদ্যান ছাড়াও কুমিল্লার বার্ডে একটি রুটিফল গাছ রয়েছে, রুটিফল গাছ রয়েছে ফার্মগেটের কাছের খামারবাড়িতেও।
রুটিফলের যতো গুণ
রুটি ফলের পাতার ক্কাথ রক্ত উচ্চচাপ ও শ্বাসকষ্ট উপশম করে। জিহ্বার প্রদাহে পাতা বেঁটে প্রলেপ দেয়া হয়। এর কষ চর্মরোগ ও সাইটিকা উপশমে বিশেষ উপকারী। প্লিহার উপশমে ভাজা পাতার চূর্ণ বিশেষ উপকারী। কোন কোন এলাকায় রুটিফল দিয়ে ক্যান্ডি, চিপস্, এমনকি মিষ্টি আচার তৈরি হয়ে থাকে।
অনেকে মনে করেন রুটি ফল কোন ফল নয় বরং সবজি। ফল কিংবা সবজি যাই হোক, কেউ রুটি ফল খেতে চাইলে স্মরণাপন্ন হতে পারেন বছরের জুন-জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা