রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে : এফবিসিসিআই
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:৪১
আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং মিল মালিকদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
রোববার এফবিসিসিআই আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।
এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেন, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির মাধ্যমে কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন থাকতে হবে। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে খুচরা, পাইকারি বাজার ও আড়ৎ পর্যায়ে পণ্য কেনা-বেচায় রশিদ (ইনভয়েস) প্রদানের তাগিদ দেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ব্যবসা করতে হবে। বিগত সময়ে ব্যবসায়ীদের প্রতি সাধারণ মানুষের যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে হবে।’
তিনি জানান, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রমজানের চাহিদা মেটাতে নিত্যপণ্য আমদানিতে এলসি সহজীকরণের জন্য এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল।
তিনি জানান, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি কাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করছে কমিটির সদস্যরা।
তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে।
এ সময় চাল ও গম ইত্যাদি পণ্য উৎপাদন করে সরবরাহ শৃঙ্খল স্বাভাবিক রাখার জন্য কৃষক ও খামারিদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীদেরকেও ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, সারাবিশ্বে যেখানে উৎসব পার্বণ এলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমিয়ে দেন, সেখানে আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন। উৎসবে পণ্যের দাম বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে ব্যবসায়ীদের অসাধু তকমা দেয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বন্ধের লক্ষ্যে বিক্রয়ের পাকা রশিদ বা ভাউচার প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে বেসরকারি খাতের বিরাট ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: আরিফুল হাসান বলেন, ‘বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানি ও মজুদ ইত্যাদি নিয়ে বাজারে আমরা অভিযান পরিচালনা করতে চাই না। ব্যবসায়ীরাই এর সামাধান করতে পারে।’
সভায় আসন্ন রমজান মাসে বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো সঙ্কট হবে না বলে জানান পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।
তেল ছাড়াও আসন্ন রোজাকে ঘিরে বাজারে চিনি, ডাল, ছোলা ও খেজুরসহ অন্যান্য পণ্যের সঙ্কট সৃষ্টি হবে না বলে আশ্বাস দেন মিলমালিক ও পাইকারসহ বাজার সমিতিগুলো।
মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো: আমিন হেলালী, হাবীব উল্লাহ ডন ও পরিচালক মোহাম্মাদ আনোয়ার সাদাত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস