‘সাগর-রুনীর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে ডিআরইউ’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৪৪
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্থায়ী সদস্য সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ১১ বছর পার হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদনই জমা না দেয়ায় চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। নেতারা বলেন, সাগর-রুনীর হত্যার পর থেকে সাংবাদিক সমাজ দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ডিআরইউ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগির ডিআরইউ চত্বরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যার ১১তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাজে বক্তারা এসব কথা বলেন। ডিআরইউ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, সাগর-রুনী হত্যার পর ডিআরইউ সকল সাংবাদিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং এই হত্যার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল কর্মসূচি পালন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু এই হত্যার বিচার এখনো হয়নি। এই হত্যার তদন্ত করছে র্যাব। র্যাব আদালতের কাছে ৯৫ বার সময় চেয়েছে। আদালত তাদেরকে সময় দিয়েছেন। কিন্তু র্যাব যদি না পারে তাহলে উনারা আদালতকে বলুক যে তারা পারছে না।
সাংবাদিক হত্যার বিচার হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির ক্ষেত্রে যারাই যখন ক্ষমতায় থাকুক না কেন সকলের আচরণ অভিন্ন। এর অবশ্য কারণ রয়েছে- সাংবাদিকরা তাদের লেখনির মাধ্যমে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলেন। অন্য সব হত্যার বিচার হলেও সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না! কিন্তু সাগর-রুনীর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই দাবি থেকে সরে যাবো না। সাগর-রুনীর হত্যার বিচারের দাবিতে ডিআরইউ ধারাবাহিক আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ গণমাধ্যমবিরোধী সকল আইন বাতিলের দাবি জানান মুরসালিন নোমানী।
প্রতিবাদ সমাবেশে র্যাবকে উদ্দেশ্য করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্র এবং আইনের গল্প করার চেষ্টা করবেন না। আর প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে তদন্ত প্রতিবেদন যদি দাখিল করেন তাহলে র্যাবের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করব। নিজেদেরকে এলিট ফোর্স বলেন। আর সাগর-রুনীর হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯৫ বার সময় নেন! আর এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণ হয় যে, সাগর-রুনীর হত্যার প্রতিবেদন দাখিলে র্যাবের স্বদিচ্ছার অভাব আছে। আমি প্রত্যাশা করি, র্যাবের বোধোদয় হবে এবং তারা স্বচ্ছ প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, সাগর-রুনী হত্যার ১১ বছর পার হয়েছে। এই হত্যা বিচার এখনো আমরা পায়নি। ৯৫ বার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। বিচার তো দূরের কথা। আর এই হত্যার বিচার না হওয়ার কারণে আরো ৫৪ জন সাংবাদিক হত্যা হয়েছে। সুতরাং যদি সাগর-রুনীর হত্যার বিচার হতো তাহলে এসব সাংবাদিক হত্যা হতো না।
প্রতিবাদ সমাবেশে ডিআরইউ সহ সভাপতি দীপু সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক মঈনুল আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক কাওসার আজম, নারী বিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেঁজুতি, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মনির মিল্লাত, ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, কিরণ শেখ, আলী ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন, ডিআরইউর স্থায়ী সদস্য কাজী জাহিদুল হাসান, মাজহারুল হক মান্না, তৌহিদুর রহমান, মো: আসাদুজ্জামান, মো: আবু দাউদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া ডিআরইউর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, কার্যনির্বাহী সদস্য মোজাম্মেল হক তুহিন, এস এম মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।