সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ ও নতুন কালাকানুন পাস থেকে বিরত থাকার আহ্বান বিএফইউজের

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ ও নতুন কালাকানুন পাস থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।

শনিবার জাতীয় বিএফইউজে কার্যালয়ে পরিষদের সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ। সঞ্চালনা করেন মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন।

সভায় এক প্রস্তাবে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) প্রণয়নের শুরু থেকে সাংবাদিক সমাজ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে এ কালো আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকার আইনটি পাসের সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও তা রক্ষা করা হয়নি। বরং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যথেচ্ছভাবে এ নিপীড়নমূলক আইন ব্যবহার হচ্ছে। এখন সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন নতুন আইনের ফন্দিফিকির চলছে। যার ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যম কর্মী আইন সংসদে পাসের প্রক্রিয়া চলছে। তোড়ঝোড় চলছে ডাটা প্রটেকশন আইন নামে আরো একটি কালাকানুন প্রণয়নের। একই সাথে সাংবাদিকদের জরিমানার বিধান রেখে প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ যেকোনো ধরনের কালো আইন প্রণয়ন থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে কোনো আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হলে অংশীদার হিসেবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করতে হবে।

পরিষদ সভায় ক্রমাগতভাবে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) নির্বাহী পরিষদ। একইসাথে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে তারা।

বলা হয়েছে, প্রশাসনের নির্লিপ্ততার কারণেই সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। চলতি আগস্ট মাসে বিভিন্ন স্থানে ১৭টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণ করে ভয় ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতাকে রুদ্ধ করতে চায়।

সভার অপর এক সিদ্ধান্তে বলা হয়, দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাতের আঁধারে ভোট কিংবা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ব্যালট বাক্স ভরে দেয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার প্রবণতায় দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেই সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, রাশিদুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব নাসির আল মামুন, শফিউল আলম দোলন ও মো: সহিদ উল্লাহ মিয়াজী, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ খায়রুল বাশার, দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলাউদ্দিন, আবদুস সেলিম, জিয়াউর রহমান মধু, শামসুদ্দিন হারুন, এ কে এম মহসীন, মো: জাকির হোসেন, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো: আনিসুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি মির্জা সেলিম রেজা, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ প্রমুখ।