অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের তিন দফা দাবি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩৮
অধস্তন আদালতের কর্মচারীদেরকে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে গণ্য করে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদানসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারি এসোসিয়েশন।
শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠানের নেতারা এ দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার। এসময় সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিনসহ সগঠনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দুই দফা দাবি হলো, সকল ব্লক পদ বিলুপ্তকরে যুগোপযোগী পদ সৃজন করে হাইকোর্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের ন্যায় যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর পদোন্নতি বা উচ্চতর গ্রেড প্রদানের ব্যবস্থা করা। এবং অধস্তন সকল আদালতের কর্মচারীগণের নিয়োগ বিধি সংশোধন করে এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এ দাবি আদায়ে সংগঠনটি তিন মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে সারাদেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে সভাপতি রেজোয়ান খন্দকার জানান।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিচার বিভাগের কর্মচারী হওয়া সত্বেও বিচার বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট আইন মন্ত্রণালয় কিংবা উচ্চ আদালতের কর্মচারীদের ন্যায় সুযোগ সুবিধা প্রদান না করে আমাদেরকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার বিচারকদের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসবেতন স্কেল নামে একটি স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদান করেন। কিন্তু আমরা একই দফতরে বা আদালতে বিচার কার্যে বিচারকগণের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে কর্ম সম্পাদন করা সত্বেও আমাদেরকে বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে আমরা বিচার বিভাগের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত। এছাড়াও, বিচারকগণ স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর পাশাপাশি দেওয়ানী আদালতের অবকাশকালীন সময়ে (ডিসেম্বর মাস) ফৌজদারী আদালতে দায়িত্ব পালন করার জন্য এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমান অর্থ অবকাশকালীন ভাতা হিসাবে প্রাপ্ত হন এবং সম্মানিত বিচারকগণ প্রতি মাসেই বিচারিক ভাতা হিসাবে মূল বেতনের ৩০ শতাংশ প্রাপ্ত হন, চৌকি আদালতের বিচারকগণ চৌকি ভাতা প্রাপ্ত হন। কিন্তু বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত না করায় আমরা এ সকল ভাতা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, আদালতের কর্মচারীরা বিচারিক কাজের অতি আবশ্যক সহায়ক কর্মচারী। বিচারাঙ্গনে মামলা বৃদ্ধির ফলে মাননীয় বিচারকগণ যেমন কাজের ভারে ভারাক্রান্ত, তেমনি কর্মচারীরাও দিন দিন অধিক কাজের চাপে ভারাক্রান্ত। আদালতের একজন সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বিচার কাজে সহায়তা করাসহ আমানতদারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তার ওপর ন্যস্ত থাকে। এ কারণে আদালতের কর্মচারীগণ সমাজে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হন কিন্তু বেশীরভাগ কর্মচারীরা-ই আর্থিকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করে থাকেন। অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের কোনো উন্নতি নেই, পদোন্নতির যেটুকু ব্যবস্থা আছে, তার চেয়ে ব্লক পদের সংখ্যাই বেশী। আবার যাদের পদোন্নতির সুযোগ আছে তাদের দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।