বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের বিশ্ব নদী দিবস পালন
- ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৫৫, আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৫৫
বিশ্ব নদী দিবস ২০২১ পালন করেছে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন। শনিবার সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব-তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংগঠনটির উদ্যোগে নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নদী দখলকারীরা শক্তিশালী। আমার দূর্বল নই বরং তাদের থেকেও শক্তিশালী। কোনো নদী দখলকারীকে ছাড় দেয়া হবে না। সকল অবৈধ দখলকারীকে উচ্ছেদ করা হবে তালিকানুযায়ী। যারা নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার দেয়া উচিত। নদী ও জলাশয় বিষয়ক আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন।
সভার বিশেষ অতিথি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ বলেন, নদীর তীরে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। নদীর তথ্য পাঠ্যপুস্তকে সংযুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অনুমোদন ছাড়া নদী এবং খালবিলে কোনো প্রকল্প নেয়া যাবে না। নদী দখলকারীদেরকে তাদের নিজ খর্চায় উচ্ছেদ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার সাদত বলেন, ৫৫ হাজার ৫৫০ বর্গমাইলের এ দেশে নদ নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত সে বিষয়ে সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা এখনো ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। নদী মাতৃক আমাদের এ দেশের জন্য এটা চরম এক ব্যর্থতা। সরকারি সংস্থাগুলো বলছে, ২৩০টি, উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে ৪০৫টি, শিশু অ্যাকাডেমির শিশু বিশ্বকোষে বলা হয়েছে ৭০০টি, লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় বলা হয়েছে এক হাজার ৩০০টি, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলছি এক হাজার ৫০০টির ওপর, গবেষক ম. ইনামুল হক বলছেন, প্রায় দুই হাজারটি নদী রয়েছে।
অন্যদিকে উজানের অভিন্ন স্বীকৃত নদী ৫৭টি হলেও বাস্তবে রয়েছে ১০৭টি। বিভিন্ন সংখ্যার ফলে আমরা বিভ্রান্ত। তাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে অনুরোধ করবো নদ-নদীগুলো দখলমুক্ত, প্রবাহমান ও জীবন্ত রাখতে চাইলে এর প্রকৃত সংখ্যা জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন ২০০৫ সাল থেকে ১৭ দফা দাবি নিয়ে নদী ভিত্তিক স্বতন্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। নদী এখন স্বত্তা হিসেবে আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। নদীর লিগাল গার্ডিয়ান জাতীয় রক্ষা কমিশন। নদী আদালত গঠনের মাধ্যমে দখল ও দূষণকারীদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। নদী ভাঙ্গন রোধসহ নদী উন্নয়নের জন্য সরকারের বরাদ্ধকৃত টাকা যাতে কোনো অসাধু চক্র লুটপাট করে খেতে না পারে সে জন্য নদী কমিশনকে মনিটরিং করতে হবে। তাছাড়া নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
বিশিষ্ট নদী গবেষক গেরিলা লিডার ড. এস এম শফিকুল ইসলাম কানু বলেন, আমাদের তিস্তা নদীকে যেকোনো মুল্যে রক্ষা করতে হবে। নতুবা আমাদের উত্তরঙ্গ অচিরেই মরুভূমিতে পরিনত হবে।
সহ সভাপতি মাজেদা শওকত বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটামাটি হারাচ্ছি ভাঙ্গনরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখছি না।
আরো বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার আমিনুল হক টুটুল, এ কে এম সিরাজুল ইসলাম, মনির মুননা, প্রকৌশলী ড. লুৎফর রহমান, ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক মো: বসির উদ্দিন, বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক রফিকুল আলম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান, যুগ্ম সম্পাদক ড. মো: বোরহান উদ্দিন অরন্য, অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম (লিন্টু), কলিমুল্লাহ ইকবাল, মো: তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো: শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আলম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন বুলবুল, জাহিদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাসিবুল হক পুনম, জীব বৈচিত্র বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার হাছিবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক এ কে এম নাজমুল হক, ঢাকা মহানগরের সভাপতি আনিছুর রহমান, সহ সভাপতি মো: মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহসীনুল করীম লেবু, ঢাকা জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি জামান ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মাসুদ খান, প্রিন্সিপাল হুমায়ুন কবির, শামীম মোহাম্মদ, ফেরদৌসী বেগম, অ্যাডভোকেট পরিতোষ প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি