রুহুল আমিন গাজীসহ কারাবন্দী সকল সাংবাদিকের মুক্তির দাবি সাংবাদিক নেতাদের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ মে ২০২১, ১৯:৫৮, আপডেট: ২৩ মে ২০২১, ২০:০২
প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শুধু মুক্তি নয়, অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। একইসাথে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজীসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান তারা।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা এসব দাবি করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শুধু মুক্তি দিলেই হবে না, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাও প্রত্যাহার করতে হবে। সাংবাদিক নেতারা আরো বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব কর্মকর্তা রোজিনাকে হেনস্তা করেছেন, তাদেরও বিচার করতে হবে। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। এরপরও জামিন দেয়ার সময় শর্ত দিয়েছে, তার পাসপোর্ট রেখে দিতে হবে। রোজিনার পাসপোর্ট রেখে দেয়া মানে, যারা লেখালেখি করেন, তাদের সতর্ক করা।
জাতীয় প্রেস ক্লাব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, রোজিনা ইসলাম করোনার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি প্রকাশ করেছেন। আর এই সরকারের অবস্থান হচ্ছে দুর্নীতির পক্ষে। দুর্নীতিবাজদের জেল হয় না, শাস্তি হয় না। শাস্তি হয়েছে রোজিনার। এই সরকার যেদিন সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলছে, তার পর দিন সাংবাদিক গ্রেফতার করা হচ্ছে। নয়তো কোনো সংবাদপত্র বন্ধ হচ্ছে।
বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সচিবালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, যারা রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া রোজিনাকে হেনস্তার ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলে আমাদের আন্দোলন চলবেই।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দুর্নীতিবাজরা আজ দিব্যি ঘরে বেড়াচ্ছেন। অথচ এসব দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচণকারী সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে কারাগারে যেতে হয়েছে। তার মানে এই নয় কি, এ রাষ্ট্র দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) মো: নুরুল হক নুরু বলেছেন, সচিবালয়ের মতো জায়গায় এক গণমাধ্যমকর্মীকে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখার অধিকার কোনো সরকারি কর্মকর্তার নেই। তিনি যদি কোনো অপরাধ করতেন, তবে তাকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করতে পারতেন তারা। কিন্তু তা না করে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আ স ম জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার ও দফতর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর প্রমুখ।
মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক জাকির হোসেন জীবন, মহিলা সম্পাদিকা আজিজা সুলতানা, মফস্বল সম্পাদক মতিউর রহমান সরদার, জসীম মেহেদী, তালুকদার বেলাল, কাজী ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের কার্যনির্বাহী সদস্য এ কে এম মহসিন, এশিয়া বানীর ইউনিট প্রধান মিয়া আবদুল হান্নান, ডিআরইউ সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মফিজুর রহমান লিলু, যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রাসেল আহমেদ, নির্বাহী সদস্য এম এম সেকান্দার আলী, এইচ এম জামাল উদ্দিন, জেসমিন জুই, মোশাররফ হোসেন ভুইয়া, এনামুল ইসলাম তুহিন ও বাংলাদেশ পরিক্রমার সম্পাদক মো: আল আমিন প্রমুখ।