১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘নবাব সলিমুল্লাহ, শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানীকে যৌথভাবে ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে’

বক্তব্য রাখছেন নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার - ছবি : সংগৃহীত

নবাব সলিমুল্লাহ, শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানীকে যৌথভাবে ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে মন্তব্য করে উনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের সংগঠক ও জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশে কোনো একক ব্যক্তিকে জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিয়ে জাতিকে আর বিভক্ত করা উচিৎ নয়।’

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আল্লামা ইকবালের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর পুরানা পল্টনের ডা. নওয়াব আলী টাওয়ারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্যান-ইসলামিক মুভমেন্টের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি একথা বলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘ধর্ম, দর্শন ও রাজনীতির কবি আল্লামা ড. মুহাম্মদ ইকবাল শুধু পাকিস্তানের কবি নন, তিনি মুসলিম জাতিসত্তার কবি ও গোটা মুসলিম জাহানের জাতীয় কবি। আজকের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতিসত্তা গঠনেও আল্লামা ইকবালের রাজনীতি, সাহিত্য ও দর্শন দারুণভাবে কাজে লেগেছিল। তাই শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাবোধের জায়গা থেকে অবিলম্বে ঢাবির ইকবাল হলের নাম পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে।’

বক্তারা আরো বলেন, ‘সার্জেন্ট জহুরুল হকের নামে আরেকটি হল প্রতিষ্ঠা করেও সম্মান প্রদর্শন করা যাবে। আল্লামা ইকবালের নামে হলটা কেন সার্জেন্ট জহুরুল হকের নামে হবে?’

প্যান-ইসলামিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো: মোস্তফা জামাল ভূইয়ার সভাপতিত্বে সংগঠনের উপদেষ্টা এবং নবাব সলিমুল্লাহ অ্যাকাডেমীর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শুভর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নবাব সলিমুল্লাহ অ্যাকাডেমীর সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, ‘একাত্তর পরবর্তীতে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের কারণে আমরা মুসলিম জাহানের অনেক সূর্যসন্তানকেই শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি। কিন্তু আজ সময় এসেছে, মুসলিম জাতিসত্তার বলে বলীয়ান হয়ে সকল বাধার বিন্ধ্যাচল পেরিয়ে আমাদের পূর্বসূরীদের অবদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম জাতির সামনে তুলে ধরার।'

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মো: মোস্তফা জামাল ভূইয়া বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য মহাকবি আল্লামা ইকবালকে আমরা হৃদয়ে লালন করলেও আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করতে পারিনি। পাঠ্যপুস্তকে তার রচনাবলী সংযুক্ত করতে পারিনি। তার রাজনীতি, দর্শন ও সাহিত্যকে বাংলাদেশী মুসলমানদের মধ্যে চর্চা হয়নি। এ ব্যর্থতা আমাদের সকলের। আজ নতুন বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী ন্যারেটিভের বাইরে গিয়ে বৃহত্তর মুসলিম পরিচয়কে জাগিয়ে তুলতে হলে আল্লামা ইকবাল অপরিহার্য।'

সঞ্চালনায় সাইফুল ইসলাম শুভ বলেন, ‘করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট থাকতে পারলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ড. মুহাম্মদ ইকবালের নামে হল থাকতে পারবে না? ইসলামাবাদের প্রধান সড়কটির নাম যদি শেরেবাংলার নামে হতে পারে তাহলে ঢাকার বুকে গুলিস্তানের জিন্নাহ এভিনিউ কেন পুনঃপ্রবর্তন হবে না? কায়েদে আজমের সমাধিফলকে যদি বাংলা লেখা থাকতে পারে তাহলে বাংলাদেশে কেন একটিও উর্দু পত্রিকা থাকবে না?’

সভায় আমন্ত্রিত অতিথি সাইমুম সাদী বলেন, ‘আলেমরা আল্লামা ইকবালের কবিতা দিয়ে ওয়াজ-মাহফিল করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকলেও তার চর্চায় এগিয়ে আসছে না। আজ সময় এসেছে আল্লামা ইকবালকে জাতির সামনে তুলে ধরার।'

এ সময় বিহারি কমিউনিটির নেতা আফজাল ওয়ার্সী আল্লামা ইকবাল রচিত বেশ কয়েকটি ফার্সি ও উর্দু কবিতা আবৃত্তি করে ইকবালের অমর সৃষ্টির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন।

উক্ত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের নেতা সাইমুম সাদী, নেজামে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, বিহারি কমিউনিটির নেতা আফজাল ওয়ার্সীসহ প্রমুখ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement