অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ, দ্রুত সংস্কার প্রসঙ্গে
- মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার
- ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৬
বর্তমান অবস্থায় অর্থনীতির তিনটি অবস্থার দিকে আমরা নজর দিতে পারি। যেমন- সামষ্টিক অর্থনীতি, মধ্যম অর্থনীতি এবং ব্যক্তি অর্থনীতি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে আর্থিক খাত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। টাকার মান কমে গেছে, ডলার সঙ্কটে আমদানিও কমিয়ে দিতে হয়েছে। এ ছাড়াও রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়তে থাকায় প্রবৃদ্ধি এখন প্রশ্নের সম্মুখীন।
শিক্ষিত তরুণদের বিপুল বেকারত্বের হার মধ্যম অর্থনীতির পর্যায়কে ইঙ্গিত করে। ২০১৬ ও ২০২৩ সালের সময়কালে শিল্প ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান কমে গেছে। বেড়েছে কৃষি খাতে। বেসরকারি বিনিয়োগ কমেছে। ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। বেকারত্বও বাড়ছে। এতে অর্থনীতিতে যে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে অর্থনীতিবিদদের তা নতুন করে বর্ণনা করতে হবে।
বিগত সরকারের পতনের পর কলকারখানা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। এই মুহূর্তে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো, সাধারণ নির্বাচনের আগেই অর্থনীতি পুরোপুরি সচল করা।
১৫ বছরের লুটপাট, দুঃশাসন ও সন্ত্রাসের রাজত্বে সব অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। আসলে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে ব্যাংক খাত পুরোপুরি ধসিয়ে দেয়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি এবং পুঁজিবাজারে উপর্যুপরি কারসাজির মাধ্যমে যেভাবে অর্থ লোপাট করা হয়েছে, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে অর্থনীতির ভিত ধ্বংস করা, দেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন বন্ধ রেখে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে গ্যাস আমদানি এবং বিদেশী কোম্পানির সাথে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিতে দেশের স্বার্থ যেভাবে বিকিয়ে দেয়া হয়েছে, তার পরিণতিতে মেরুদণ্ড ভেঙে পড়েছে অর্থনীতির। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানায় উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। বন্ধ হয়ে যায় অসংখ্য কলকারখানা। বেকার হয়ে পড়েছে বন্ধ কারখানার ও দুস্থ হয়ে পড়া শিল্পকারখানা থেকে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা। এমতাবস্থায় এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থনীতি পুনরায় পুরোপুরি সচল করা এবং আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে চার ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকি এবং এই চ্যালেঞ্জগুলোর সাথে সম্পৃক্ত অর্থনীতির তিনটি ঝুঁকির দিকেও নজর দিতে হবে। প্রথম ঝুঁকি হলো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিজনিত আমদানি নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘস্থায়ী হওয়া এবং তৃতীয়ত, সমন্বিত সংস্কার কর্মসূচি না নেয়ায় আর্থিক খাতের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাওয়া।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর জন্য সরকার তিনটি পন্থা অবলম্বন করতে পারে।
১. উচ্চ মূল্যস্ফীতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকও নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। নীতি সুদহার এখন বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু সরবরাহ-শৃঙ্খলা ও বাজারকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় নীতি সুদহার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের নিয়ম কাজ এখন করছে না। তাই বাজারে চাপ কমানোর জন্য দ্রুত আমদানি বাড়িয়ে হলেও ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে।
২. কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নীতি গ্রহণ করতে হবে। বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটানা ১০-১২ বছর কোনো পরিবর্তন করেনি। কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীভুক্ত ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেয়ার জন্য এটা করা হয়। এমতাবস্থায়ও এটিকে দীর্ঘদিন বাজারভিত্তিক করার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন না আনায় একটি সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিময় হার বা নীতি সুদহার পরিবর্তন করেনি। তাই এখন নীতি সুদহার বাড়িয়েও তার রাশ টেনে ধরা সম্ভব হয়নি। এই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের নিয়ম শুধু প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রযোজ্য। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকরা একাকার হয়ে যাওয়াতে যে গোষ্ঠীতান্ত্রিক বাজার তৈরি হয়েছে তা ভোক্তাদের ওপর অধিকতর জবরদস্তিই চাপিয়ে দিয়েছে। নীতিপ্রণেতা এবং গোষ্ঠীতন্ত্র আলাদা করে রেগুলেটরি ব্যবস্থার আমূল সংস্কারই বাজারকে আস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে। পরে ইচ্ছেমতো টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ধার দেয়ার কারণেও বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে মুদ্রাস্ফীতিতে। বিপুল টাকা বিদেশে পাচারের কারণে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।
৩. খেলাপি ঋণ আসলে কত, তা বের করা জরুরি। ব্যাংক থেকে একক ব্যবসায়ী কত ঋণ পাবেন, পরিচালনা পর্ষদে এক পরিবার থেকে কতজন থাকবেন, তারও পুনর্বিবেচনা দরকার। আরো দরকার খেলাপি গ্রাহকদের খেলাপি তালিকা থেকে বের হওয়ার নীতি এবং অবলোপননীতি প্রণয়ন করা।
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ও সুশাসনের সমস্যা প্রকট। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ব্যাংক ও পোশাক খাত নিয়ন্ত্রণ করছে। আর্থিক রাজনীতির এসব কুফল নিয়ন্ত্রণের বিধিবিধান সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। সুশাসনের প্রক্রিয়া এখনই শুরু করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তৈরী পোশাকের ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। তবে অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই খাতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে না।
তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। খোলাবাজারে সাশ্রয়ী দামে নিত্যপণ্য বিক্রি অব্যাহত রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে মাথাপিছু খাদ্যনিরাপত্তা। যেকোনোভাবে ঠিক রাখতে হবে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা।
সরকারকে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে হবে এবং ঘাটতি পূরণে সরকার বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করবে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সফল অর্থনীতির প্রাণ; সে জন্য আমাদের বেসরকারি বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে হবে। আবশ্যিক পণ্যের আমদানি ব্যতীত অন্যান্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে হবে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাধ্যমে জনগণের চাহিদা মেটাতে পারলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। পতিত সরকার বিশেষত মূলধনী সামগ্রী আমদানির গলা টিপে ধরে অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা কমিয়েছে। এটি ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যার শামিল।
অস্থিতিশীলতার মূল কারণ বেকারত্ব
শিক্ষিত তরুণসমাজকে বলা হয় দেশের ভবিষ্যৎ। কিন্তু দুর্নীতির করালগ্রাসে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্রমেই হয়ে উঠছে অনিশ্চিত। মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩০-এর নিচে। প্রতি বছর কর্মবাজারে প্রবেশ করা বিপুলসংখ্যক তরুণদের এতদিন জনসংখ্যাগত সুবিধা হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান না হলে আমরা জনসংখ্যা বৃদ্ধির সুবিধা তো পাবই না; বরং তা বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই বেকারত্বের হার বেশি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের বেকারত্বের হার ছিল ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার, যা অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি। গত দেড় দশকে অর্থনীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হলেও কর্মসংস্থান সেভাবে হয়নি। এটি হলো কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি। ফলে গত দুই দশকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বৈষম্য বেড়েছে অনেক বেশি।
এছাড়াও কাজ না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে চলে যাওয়ায় দেশ মেধাশূন্য হচ্ছে। ইউনেসকোর তথ্য বলছে, ৭০ থেকে ৯০ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী প্রতি বছর উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পাড়ি জমায়। সব কিছুর প্রভাবে এখন শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয় বরং সামাজিকভাবেও বৈষম্যমূলক সমাজে পরিণত হচ্ছে।
আলজাজিরার এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছর। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ কোনো কাজে, প্রশিক্ষণে বা শিক্ষায় নেই। ফলে গত দুই দশকে বৈষম্য ব্যাপকতর হয়েছে। গত ১৫ বছরের এই বাস্তবতায় উপায়ান্তর না দেখে দেশের তরুণদের দৃষ্টি দেশের অপরিবর্তনীয় ক্ষমতার কেন্দ্রীভূতকরণকে কারণ হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করছিল এবং পরবর্তীতে এই আন্দোলন বিস্ফোরিত হয়ে তা তরুণ-জনতার এই অভ্যুত্থানের সূত্রপাত করে।
ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্য সামাজিক সংহতি ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করে, অসন্তোষ ও সহিংসতা উসকে দেয়, দারিদ্র্য হ্রাস ও মানব উন্নয়নে বাধা দেয়, অর্থনৈতিক দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য হুমকির মুখে ফেলে। তাই বিদ্যমান বাস্তবতায় সরকারের অন্যতম কাজ হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
ব্যবসায়-বাণিজ্যের স্থবিরতা কাটাতে হলে জরুরি আমদানি-রফতানি ও শিল্পকারখানা চালু করতে হবে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এর মধ্যে আস্তে আস্তে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে। ফলে অর্থনীতিতে গতি আসবে যদি ব্যবসায়ীরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন।
কাঠামোগত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, যেখানে কারখানামালিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যথাযথ কর (প্রত্যক্ষ কর) আহরণ করা হয় না। সেই সাথে রয়েছে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কিংবা আমদানি-রফতানির নামে লুটপাট ও বিদেশে অর্থ পাচারের বিপুল সুযোগ। এ কারণেই দেশের অর্থনীতির আকার যত বড় হচ্ছে, বৈষম্য তত বাড়ছে।
মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেয়ার পক্ষপাতী। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশের বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা ভিন্ন চিন্তা করতে পারেন। এমতাবস্থায় দ্রুত প্রয়োজন সবার আগে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনীতি সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের বিদ্যমান সমস্যার নিরসনে কাঠামোগত সংস্কারে হাত দিতে হবে। যেমন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি দূরীকরণ, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, কর ও শুল্কনীতির সংস্কার ইত্যাদি।
অর্থনীতির বহুমুখীকরণ
ইকোনমিক টাইমসের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতি তৈরী পোশাক ও বস্ত্র খাতের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। গত ১৫ বছরে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হলেও এ দেশের অর্থনীতির বহুমুখীকরণ হয়নি।
প্রবৃদ্ধির চেয়ে বৈষম্য বেড়েছে অনেক বেশি
দুই দশক ধরে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও বাংলাদেশ বৈষম্য সূচক বৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা সিপিডির তথ্য, কর ফাঁকি ও অস্বচ্ছ ব্যবস্থার কারণে সরকার বছরে ৫৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা থেকে দুই লাখ ৯২ হাজার ৫০০ কেটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। টাকার এই অঙ্ক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দের আটগুণ; আর স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দের দ্বিগুণ। এভাবে প্রত্যক্ষ করের তুলনায় পরোক্ষ কর বেশি হওয়ার অর্থ হলো দরিদ্রদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ব্যয় করা হচ্ছে ধনীদের সম্পদ ও আয় বৃদ্ধির কাজে; ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে জাতীয় আয়ে জনগণের ভাগ কমছে অর্থাৎ বৈষম্য বাড়ছে। বণ্টন যত বেশি সুষম হবে, সমাজের দ্বারা অর্জিত নিট লাভ তত বেশি হবে। সুযোগগুলো মেরুকরণ হলে নিট লাভ হবে তত কম।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণ, উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হওয়া- এসব করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক গুণগত পরিবর্তন দরকার। আর প্রাতিষ্ঠানিক গুণগত পরিবর্তনের জন্য প্রথম প্রতিষ্ঠান হলো রাজনীতি। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু রাজনীতি ছাড়া প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি অর্জন সম্ভব নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। কিন্তু প্রথমে বাস্তবায়নে হাত দিতে হবে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা।
লেখক : অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা