১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১, ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মানিলন্ডারিং মারাত্মক ক্ষতিকর

- ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। করোনাকালীন অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ব অর্থনীতি কত দিনে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে, তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আশার বাণীতে আস্থা রাখা যাচ্ছে না; কারণ এখনো করোনার চূড়ান্ত বিদায়ের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। করোনা শুরুর আগে বিশ্ব অর্থনীতির চমৎকার গতিশীলতার মধ্যেও অনিশ্চয়তা ছিলই। বিশেষ করে বিশ্ব অর্থনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে একধরনের রূপান্তর প্রক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছিল। জাপান কয়েক বছর আগে বিশ্ব অর্থনীতিতে তার দ্বিতীয় স্থান হারিয়েছে চীনের কাছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে অতিক্রম করে বিশ্ব অর্থনীতিতে শীর্ষস্থান দখল করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরেই চীনের বিরুদ্ধে অনৈতিক বাণিজ্য এবং আর্থিক দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ উত্থাপন করে আসছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ পাত্তা দিচ্ছে না।

বিশ্ব অর্থনীতিতে রাতারাতি একে অন্যকে অতিক্রম করে যাওয়ার একটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আর এ কারণে অর্থনীতিতে একধরনের দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। রাষ্ট্র ও ব্যক্তিপর্যায়ে এই আর্থিক দুর্বৃত্তায়ন এখন অনেকটাই প্রকাশ্য। ব্যক্তি যখন দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে তখন সেই অর্জিত অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাকে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।
প্রতিটি রাষ্ট্রেরই অর্থ ব্যবহারের নীতিমালা থাকে। কেউ চাইলেই অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ ঢালাওভাবে ব্যবহার করতে পারে না। এমনকি অবৈধ অর্থ স্বীয় দখলে রাখাটাও বিপজ্জনক। তাই যারা অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন তারা সেই অর্থের নিরাপত্তা বিধানের জন্য নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন। অবৈধ অর্থের বৈধতা দেয়ার একটি পন্থা হচ্ছে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সেই অর্থকে যেকোনো প্রকারেই হোক অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট করানো। আর অবৈধ অর্থ একটি দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে মানিলন্ডারিং। আমাদের দেশে মানিলন্ডারিং নিয়ে নানাবিধ বিভ্রান্তিকর ধারণা প্রচলিত আছে। এমনকি অনেকেই মানিলন্ডারিং ও মুদ্রাপাচারকে একই বিষয় বলে মনে করেন; অর্থাৎ তারা মনে করেন, মুদ্রাপাচারের অন্য নাম হচ্ছে মানিলন্ডারিং।

আসলে বিষয়টি তা নয়। মুদ্রাপাচার হচ্ছে মানিলন্ডারিংয়ের একটি কৌশলমাত্র। তাই বলে মুদ্রাপাচার আর মানিলন্ডারিংকে একই অর্থে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যদি মানিলন্ডারিংয়ের সংজ্ঞার প্রতি দৃষ্টি আরোপ করি তা হলে বিষয়টি সহজেই অনুধাবন করা যেতে পারে। মানিলন্ডারিংয়ের সংজ্ঞা নিরূপণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সাবেক উপপ্রধান মাহফুজুর রহমান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মানিলন্ডারিং বলতে আসলে কী বোঝায় তা নিয়ে বাংলাদেশে একটি বিশাল বিভ্রান্তি আছে। অনেকেই প্রশ্ন করেন, মানিলন্ডারিং অর্থ টাকা পাচার কি না। আসলে মানিলন্ডারিং আর অর্থপাচার এক বিষয় নয়।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ, যারা সব সময়ই বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কটে ভোগে, তারা মনে করে মানিলন্ডারিং অর্থ হচ্ছে মুদ্রাপাচার। বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং আইনে মুদ্রাপাচারকে ঢুকানো হয়েছে। কেউ যদি অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ প্রেরণ করেন অথবা বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা দেশে নিয়ে আসেন, তা হলে তা মানিলন্ডারিং হিসেবে গণ্য হবে। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে টাকা আনা-নেয়া মানিলন্ডারিং আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু যেসব দেশে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব নেই, সেসব দেশে বাইরে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। তা হলে সে দেশে তো মানিলন্ডারিং নেই। আসলে মানিলন্ডারিং হচ্ছে কেউ যদি অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন এবং সেই টাকা অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট করানোর মাধ্যমে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেন তা হলে সেই উদ্যোগ মানিলন্ডারিং হিসেবে গণ্য হবে। অবৈধ অর্থ বা সম্পত্তিকে বৈধ রূপ দেয়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে মানিলন্ডারিং। মানিলন্ডারিং প্রক্রিয়াকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংজ্ঞা অনুযায়ী, সম্পদের অবৈধ উৎস গোপন করা বা লুকানোর উদ্দেশ্যে ওই সম্পদ সম্পূর্ণ বা আংশিক রূপান্তর বা স্থানান্তর এবং উক্তরূপ সম্পদ কোন অপরাধ থেকে অর্জিত সে বিষয়ে জ্ঞাত থেকে অথবা কোনো অপরাধ সংগঠিত করেছে এমন ব্যক্তিকে সাহায্য বা সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে এবং তার কৃতকর্মের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে উক্তরূপ সম্পদের রূপান্তর বা হস্তান্তর। এক কথায় বলা যেতে পারে, মানিলন্ডারিং হচ্ছে অবৈধ অর্থ বৈধ করার প্রক্রিয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, কোনো ব্যক্তি হয়তো কাউকে খুন করল অথবা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করল। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন প্রতিরোধের জন্য আইন আছে, সেই আইনে তার বিচার হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ যদি তিনি বৈধ করার চেষ্টা করেন তা হলে তিনি মানি লন্ডারিং আইনে শাস্তিপ্রাপ্ত হবেন। অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী যেকোনোভাবেই হোক তার এই অর্থ বৈধ চ্যানেলে ঢুকাবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সেই টাকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া জমি ক্রয়, ফ্ল্যাট ক্রয় কোনো না কোনোভাবে এই টাকা সে বৈধ করার উদ্যোগ নেবে। যারা মানিলন্ডারিং করেন তারা তাদের আয়ের উৎস সবসময়ই গোপন রাখার চেষ্টা করেন। টাকা নানাভাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে দ্রæত বৈধ করার চেষ্টা করবে। মানিলন্ডারিংয়ের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তবে সাধারণত তিনটি উপায় বা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়। এসব প্রক্রিয়া হচ্ছে- প্লেসমেন্ট, লেয়ারিং ও ইন্টিগ্রেশন।

যখন কোনো অপরাধমূলক কার্য থেকে উপার্জিত অর্থ প্রথমবারের মতো ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেমে প্রবেশ করে তখন তাকে প্লেসমেন্ট বলা হয়। লেয়ারিং বলতে প্লেসমেন্টকৃত অর্থ পর্যায়ক্রমে জটিল লেনদেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে সরানোর প্রক্রিয়াকে বোঝায়। লেয়ারিং প্রক্রিয়া সফল হলে ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ এমনভাবে ব্যবহৃত হয়, যাতে মনে হয় এটি বৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ। এভাবেই লন্ডারিংকৃত অর্থ অর্থনীতিতে প্রবিষ্ট করানো হয়। যারা মানিলন্ডারিং করেন তারা এমনভাবে সবগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন, যাতে কোনো পর্যায়েই তাদের সন্দেহ করা না হয়। এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলি। এক ব্যক্তি নতুন বিয়ে করেছেন। তিনি ধূমপান করেন। কিন্তু তার স্ত্রী ধূমপান করা পছন্দ করেন না। এ অবস্থায় নববিবাহিত ব্যক্তি ধূমপানের নেশা জাগ্রত হলে ঘরের বাইরে চলে গিয়ে ধূমপান করেন। ঘরে ফেরার আগে তিনি ডাবল জর্দা দিয়ে পান খেয়ে আসেন, যাতে তার স্ত্রী ধূমপানের গন্ধ না পান। যারা মানিলন্ডারিং করেন তারাও একই প্রক্রিয়া অবলম্বন করে থাকেন। তারা কাজটি এমনভাবে করেন যেন কেউ বুঝতে না পারে। অর্থপাচার মানিলন্ডারিংয়ের একটি পদ্ধতি। কিন্তু মানিলন্ডারিং অর্থ মুদ্রাপাচার নয়। মানিলন্ডারিং দেশের অভ্যন্তরেও হতে পারে।

বিশ্বে এমন অনেক দেশ আছে যারা পাচারকৃত মুদ্রাকে তাদের দেশে স্বাগত জানায়। আবার কোনো কোনো দেশ আছে যেখান থেকে যত পরিমাণ মুদ্রা ইচ্ছা করলেই বাইরে নিয়ে যাওয়া যায়। আবার বাইরে থেকেও যত ইচ্ছা মুদ্রা নিয়ে আসা যায়। মুদ্রাপাচার বলা হয় সেই কার্যক্রমকে যখন কেউ একজন তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ রাষ্ট্রীয় আইনকে ফাঁকি দিয়ে বিদেশে নিয়ে যান। দুই ধরনের মুদ্রাপাচার হতে পারে। শুধু যে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থই বিদেশে পাচার করা হয় তা নয়, বৈধভাবে উপার্জিত অর্থও বিদেশে পাচার করা হতে পারে। অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ যা রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অপরাধমূলক কাজ সেই অর্থ বিদেশে পাচার করা হতে পারে। আবার বৈধভাবে উপার্জিত অর্থসম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ না করে লুকিয়ে রাখা হয় অর্থাৎ অপ্রদর্শিত অর্থ, সেই টাকাও বিদেশে পাচার করা হতে পারে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো সবসময়ই বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কটে ভোগে। তারা চেষ্টা করে কোনোভাবেই যেন কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে পাচার হতে না পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, একজন মানুষ তার বৈধ অর্থ কেন বিদেশে পাচার করতে যাবেন? রাষ্ট্রীয় নীতিমালা অনুযায়ী, এক ব্যক্তি একবারে যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে নিয়ে যেতে পারেন বা নিয়ে যাওয়ার অনুমতিপ্রাপ্ত তার চেয়ে বেশি অর্থ যদি তার প্রয়োজন হয় তা হলে তিনি সেই অতিরিক্ত অর্থ যেকোনো উপায়েই হোক বিদেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। মনে করি, কোনো ব্যক্তির ছেলে বা মেয়ে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। বছরে তার পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় হয় পড়াশোনা করার ব্যয় নির্বাহের জন্য। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতিমালা অনুযায়ী, তিনি হয়তো ছেলের লেখাপড়ার খরচ বাবদ প্রতি বছর চার লাখ মার্কিন ডলার বিদেশে পাঠাতে পারেন। কিন্তু অবশিষ্ট এক লাখ মার্কিন ডলার তিনি কিভাবে জোগাড় করবেন? কোনো না কোনোভাবেই এই এক লাখ মার্কিন ডলার তিনি দেশের বাইরে পাঠাবেন। এ জন্য তিনি হুন্ডি ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিতে পারেন বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় সেই অর্থ বিদেশে পাঠাবেন।

মানিলন্ডারিং যেকোনো একটি দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে অর্থপাচারের মাধ্যমে যে মানিলন্ডারিং করা হয়, তা খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ যে অর্থ দেশে ব্যবহৃত হতে পারত, যে অর্থ থেকে দেশের মানুষ উপকৃত হতে পারত সেই অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। বিদেশীরা তার সুফল ভোগ করছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র দেশগুলোর জন্য মানিলন্ডারিং আরো বেশি ক্ষতিকর। মানিলন্ডারিং একটি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অপরাধপ্রবণতাকে উৎসাহিত করে। সাধারণত অপরাধ প্রবণতার মাধ্যমে অর্জিত অর্থই বেশি পরিমাণে মানিলন্ডারিং হয়। মাদক কারবারের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ, ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ, চুরি-ডাকাতি ইত্যাদি অপরাধপ্রবণতার মাধ্যমে অর্জিত অর্থই সবচেয়ে বেশি মানিলন্ডারিং করা হয়। মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট করানো গেলে রাজস্বশ্ব আদায় কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোন দেশে মানিলন্ডারিং বেশি হয় তা জানার একটি সহজ নিয়ামক হচ্ছে দেশটির ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও কেমন তা জানার চেষ্টা করা। যে দেশে মানিলন্ডারিং বেশি হয় সে দেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও অবশ্যই কম হবে। সাম্প্রতিককালে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসে অর্থায়ন বেড়ে গেছে। তাই সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের বিষয়টিকেও মানিলন্ডারিংয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে অনেক দিন ধরেই অত্যন্ত সোচ্চার। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিংয়ের সূচনালগ্ন অর্থাৎ ১৯৯৭ সাল থেকেই এর সাথে যুক্ত রয়েছে। সাম্প্রতিককালে সন্ত্রাসে অর্থায়ন কার্যক্রম উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য সাধারণত কিছু অপরাধমূলক কার্যক্রম বেছে নেয়া হয়। যেমন- বলপূর্বক অর্থ আদায়, অপহরণ, চোরাকারবার, মাদক পাচার, ‘দাতব্য’ সংস্থা পরিচালনা, বাধ্যতামূলক অনুদান গ্রহণ ইত্যাদি। সন্ত্রাসে অর্থায়নের জন্য যে অর্থ সংগ্রহ করা হয় তা কোনো ব্যক্তির কাছে সংরক্ষণ করা হয় না। এটি নিরাপদও নয়। তাই তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত হিসেবে রেখে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেন। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন দু’টি ভিন্ন বিষয় হলেও এদের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আইনের পরিভাষায় মানিলন্ডারিং হলো- অবৈধ পন্থায় সম্পত্তি/অর্থ অর্জন বা বৈধ সম্পদ/অর্থের অবৈধ পন্থায় স্থানান্তর বা ওই কাজে সহায়তা করা।

আর সন্ত্রাসে অর্থায়ন হচ্ছে নাশকতার মাধ্যমে অর্থের জোগান দেয়া। কাজেই মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন উভয়ই একটি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। প্রতি বছর বিশ্বে কী পরিমাণ অর্থ মানিলন্ডারিং হয় তার সঠিক কোনো হিসাব কেউই দিতে পারবে না। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইকেল ক্যামদিসাস বলেছেন, বিশ্বের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত মানিলন্ডারিং হচ্ছে প্রতি বছর। কিন্তু এই পরিসংখ্যান প্রশ্নাতীতভাবে গ্রহণ করার কোনো অবকাশ নেই। একটি দেশে যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় এবং অন্যান্য কারণে দুর্নীতি বেড়ে যায় তখন সেই দেশে মানিলন্ডারিং এবং মুদ্রাপাচারও বৃদ্ধি পায়। জাতিসঙ্ঘ কয়েক বছর আগে এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, জাতিসঙ্ঘ বিশ্বাস করে, প্রতি বছর বিশ্বের মোট জিডিপির ২ থেতে ৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ ও সম্পদ মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট হচ্ছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৮০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (এক ট্রিলিয়ন=এক লাখ কোটি)। ৮০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ হচ্ছে ৮০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আর দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ হচ্ছে দুই লাখ কোটি মার্কিন ডলার। পরিসংখ্যানটি বড়ই দৃষ্টিকটু হয়ে গেল না? জাতিসঙ্ঘের দেয়া এ পরিসংখ্যানও বিশ্বাসযোগ্য নয়; কারণ পরিসংখ্যানের কোনো সূত্র প্রকাশ করা হয়নি। এ ছাড়া পরিসংখ্যানের মাঝে গ্যাপ বড়ই বেশি। জাতিসঙ্ঘের এমন কোনো অঙ্গ সংস্থা নেই যারা মানিলন্ডারিংয়ের পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করে। জাতিসঙ্ঘের দেয়া পরিসংখ্যানের কোনো ভিত্তি নেই।

একটি দেশ যখন উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয়, তখন দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। আর দুর্নীতি বৃদ্ধি পেলে মানিলন্ডারিং বেড়ে যায়। আর মুদ্রাপাচার বা অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ থেকেই সৃষ্টি হয় মানিলন্ডারিং প্রক্রিয়া। স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন গাড়িচালক আবদুল মালেক এক হাজার কোটি টাকা সম্পদের মালিক। তিনি তো বৈধ পথে এই অর্থ উপার্জন করেননি। এটি তার জ্ঞাত আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। যেকোনো মহল থেকেই তার আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে। তা হলে উপায় কী এই অর্থ বৈধ হিসেবে প্রদর্শন করার এবং ব্যবহার করার? এখানেই প্রশ্ন আসে অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিংয়ের। যারা ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ছিলেন, তাদের কয়েক জনকে আটকে বিচারের সম্মুখীন করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের মতো আরো অনেকেই তো রয়ে গেছেন। বাংলাদেশ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পরপর পাঁচ বছর দুর্নীতির ধারণা সূচকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। পরে আমাদের সেই অবস্থান অন্য কোনো দেশ দখল করে নিয়েছে। কিন্তু তাই বলে কি আমরা দাবি করতে পারব, দেশে দুর্নীতি কমেছে? দুর্নীতি অবশ্যই আমাদের দেশে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশ আমাদের চেয়ে এ ক্ষেত্রে আরো বেশি সাফল্য দেখিয়েছে। আমাদের অর্থনীতি নানাভাবে দুর্বৃত্তায়িত হয়ে পড়েছে। ফলে মানুষের মধ্যে বিত্তবান ও বিত্তহীনের ব্যবধান ক্রমে বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। একই সাথে মানিলন্ডারিংয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি (জিএফআই) তাদের এক প্রতিবেদনে কয়েক বছর আগে উল্লেখ করেছিল, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ বাইরে পাচার হয়ে যায়। একই সাথে বাড়ছে মানিলন্ডারিংয়ের পরিমাণ। প্রতিষ্ঠানটির মতে, ২০০৫ থেকে ১০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে মোট ৬১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থনীতির মূল স্রোতে প্রবিষ্ট করানো হয়েছে।

এ ছাড়া শুধু ২০১৫ সালেই মানিলন্ডারিং হয়েছে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ মানিলন্ডারিং হয় তার পরিমাণ মোট জিডিপির ২৫ শতাংশের সমান। ২০২০ সালে বিশ্বের ১৪১টি দেশের মধ্যে মানিলন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৮তম। অন্য একটি সূত্র মতে, মানিলন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে যে অর্থ আয় করে তার অন্তত ২০ শতাংশ বিদেশে পাচার করা হয়। সেই পাচারকৃত অর্থ কোনো না কোনোভাবে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় প্রবিষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রতি বছর অন্তত ৭ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়ে যায়। রফতানির আড়ালে সাত বছরে সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অন্য একটি সূত্র মতে, বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে প্রতি বছর ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। গত ১০ বছরে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়েছে ১৫৫ শতাংশ। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ হচ্ছে পাঁচ হাজার ৩৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধের কথা বলা হলেও কার্যত এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। দিন দিনই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

আন্তর্জাতিকভাবে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এতে সহায়তা দানের জন্য জি-৭ (বর্তমানে জি-২০) ১৯৮৯ সালে দ্য ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) গঠন করে। এই সংস্থার প্রধান কাজ হচ্ছে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে গবেষণা এবং এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে সদস্য দেশগুলো কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা, মানিলন্ডারিং প্রক্রিয়ার ধরন, পদ্ধতি ও প্রতিরোধের ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করা, এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন করা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে এফএটিএফ গৃহীত স্ট্যান্ডার্ড বিশ্বব্যাপী গ্রহণ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা। বিদেশী উন্নয়ন সহযোগী ও গবেষণা সংস্থাগুলো মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে যেসব তথ্য-পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, আমরা তা তোতা পাখির মতো আওড়াতে থাকি। কিন্তু এসব তথ্যের কোনোটিই বাস্তবসম্মত নয়। দুর্নীতিবাজরা কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের উপার্জিত অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করে না। তাই কেউই নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবে না বিশ্বে বা কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশে প্রতি বছর কত পরিমাণ অর্থ মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বৈধ করা হয়। ঠিক একইভাবে অর্থপাচারের পরিসংখ্যানও কেউ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবে না। এসব পরিসংখ্যান অনুমাননির্ভর মাত্র। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয় অথবা মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বৈধতা দেয়া হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউই দিতে পারবে না। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আমাদের দেশ থেকে পাচার এবং মানিলন্ডারিং হচ্ছে। কারণ দেশ দুর্নীতিবাজদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। যারা দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন করছে তা বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারছে না।

এ জন্য তা দেশের বাইরে পাচার করে দিচ্ছে। সেই পাচারকৃত অর্থ একসময় নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লন্ডারিং হয়ে অর্থনীতির মূল স্রোতে প্রবেশ করছে। ক’দিন আগে এক সংবাদে জানা গেছে, তুরস্ক তাদের দেশে মালয়েশিয়ার অনুকরণে ‘সেকেন্ড হোম’ প্রকল্প চালু করেছে। যে কেউ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে তুরস্কে বাড়ি ক্রয় এবং নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারবে। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে- ২০০ জন বাংলাদেশী তুরস্কের সেকেন্ড হোম প্রকল্পের আওতায় বাড়ি ক্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। এ দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাতজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রে যারা নগদ অর্থে বাড়ি ক্রয় করেছেন তাদের চিহ্নিত করে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশী বিপুলসংখ্যক মানুষের মাথায় হাত পড়েছে। কারণ বাংলাদেশীদের অনেকেই অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সেই অর্থ দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি বা অন্যান্য সম্পদ ক্রয় করেছেন। এখন মার্কিন প্রশাসন যদি সেই সম্পদ এবং বাড়ি বাজেয়াপ্ত করে তা হলে এসব দুর্নীতিবাজদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়বে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন কিছু দিন আগে বলেছিলেন, কানাডায় বেগমপাড়ায় যেসব বাংলাদেশীর বাড়ি রয়েছে, তার মধ্যে পেশাগত দিক থেকে সবচেয়ে বেশি হচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবী। একজন সরকারি চাকরিজীবী যদি সৎভাবে জীবনযাপান করেন, তা হলে তার পরিবারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করাই কঠিন; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় বাড়ি ক্রয় করা তো দূরের কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- সরকারি কর্মকর্তারাই বেশি বাড়ি কিনেছেন। সর্বস্তরে চলছে ব্যাপক দলীয়করণ।

এই দলীয়করণের সুযোগে একশ্রেণীর মানুষ রাষ্ট্রীয় সম্পদকে তাদের নিজের সম্পদ মনে করে আত্মসাৎ করছে। যত দিন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও অনাচার বন্ধ করা না যাবে, তত দিন কোনোভাবেই মানিলন্ডারিং ও অর্থপাচার রোধ করা যাবে না। একজন অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আমাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, দেশে দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আর সেটি করা না গেলে দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ প্রশ্নহীনভাবে ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা না হলে এই অর্থ অন্তত দেশে থেকে যাবে। দেশেই খরচ হবে। বিদেশে পাচার হবে না। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কি দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেষ্ট হবো নাকি দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ প্রশ্নাতীতভাবে অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হবে? দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি কথাটি হাসির বস্তুতে পরিণত হয়েছে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছি- এটি শুধু মুখে বললেই হবে না। তার সঠিক বাস্তবায়ন প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল