০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

সমৃদ্ধ হোক গ্রন্থাগার

-

বছর ঘুরে আবারো এসেছে ৫ ফেব্রুয়ারি, ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘সমৃদ্ধ হোক গ্রন্থাগার, এই আমাদের অঙ্গীকার’। দিবসটি গ্রন্থ ও গ্রন্থাগার সুহৃদদের জন্য উৎসবের, আনন্দের। ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর তৎকালীন সরকার ৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

পাঠক তৈরির মূল উৎস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ি মাদরাসায় গ্রন্থাগার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার চালু ও গ্রন্থাগারিকের পদ সৃষ্টি করা দরকার।

২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (শাখা-১৩) জনবল কাঠামোবিষয়ক প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। পদটি এমপিওভুক্ত। উল্লেখ্য, বহু আগে থেকেই এই স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার থাকা বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, এই গ্রন্থাগারে কমপক্ষে দুই হাজার বই থাকতে হবে। না হলে প্রতিষ্ঠানের অনুমতি মিলবে না এবং পুরান প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি নবায়ন করা হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ‘কাজির গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’। তবে ব্যতিক্রমও আছে।

একসময় স্কুল-কলেজের ‘গ্রন্থাগারিক’ পদবি পরিবর্তনের দাবি ওঠে। গ্রন্থাগারিকদের মতে, তাদের কেউ মূল্যায়ন করে না, সম্মান করে না অর্থাৎ তারা পেশাগতভাবে অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছেন। কাজেই পদবি যেন ‘শিক্ষক’ করা হয়। তাদের দাবি মঞ্জুর করা হয়েছে। স্কুলের ক্ষেত্রে পদবি ‘সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থাগার)’ ও কলেজের ক্ষেত্রে ‘প্রভাষক (গ্রন্থাগার)’ করা হয়েছে। গ্রন্থাগারিকরাও খুশি হয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন তাদের অন্য কাজে ব্যস্ত রাখা হয়।

মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস রুটিনে ‘তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা’ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ নেই বললেই চলে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মাধ্যমিক স্তরে (স্কুল-মাদরাসা) লাইব্রেরিয়ান পদ সৃষ্টি করা হলেও সিলেবাসে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা ‘সাবজেক্ট’ নেই।

‘লাইব্রেরি ওয়ার্ক’ বলতে শিক্ষার্থীরা মনমতো গ্রন্থাগারে যায়, বইয়ের পাতা উলটায় কিংবা অলস আড্ডা দিয়ে ফিরে আসে। আর সহকারী শিক্ষক/প্রভাষককে (তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা) অন্য বিষয়ের (কখনো কখনো প্রক্সি) ক্লাসে পাঠানো হয়। এতে গ্রন্থাগারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। আমরা কাক্সিক্ষত মানের বই পড়ুয়া আদর্শ নাগরিক তৈরি করতে পারছি না।

লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি


আরো সংবাদ



premium cement