১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

রাশিয়ার গভীরে ইউক্রেনের হামলার অধিকারের পক্ষে ন্যাটো কর্মকর্তা

রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে দুই দিনে ২ শতাধিক বন্দী বিনিময়
-


পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার গভীরে হামলা করার অধিকার ইউক্রেনের রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটোর এক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, সশস্ত্র সংঘাতের আইন একটি জাতিকে আত্মরক্ষার অধিকার দিয়েছে, তবে সেটি শুধু সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়। শনিবার এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ইউক্রেনকে পশ্চিমা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হবে কি-না এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে শুক্রবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে এ বিষয়ে আলোচনার জন্য দেখা করেছেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনকে পশ্চিমা তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর অনুমতি দেয়া হলে, একে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমাদের সরাসরি যুদ্ধ বলে বিবেচনা করা হবে। প্রাগে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের সামরিক কমিটির এক বৈঠকে জোটের সর্বোচ্চ সামরিক কর্তৃপক্ষ, চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল রব বাউয়ার বলেছেন, সশস্ত্র সংঘাতের আইন একটি জাতিকে আত্মরক্ষার অধিকার দিয়েছে এবং সেটি ওই জাতির সীমান্তে সীমাবদ্ধ করা হয়নি। এ সময় তিনি আরো বলেন, অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোরও তাদের অস্ত্র ব্যবহারের ওপর সীমাবদ্ধতা রাখার অধিকার রয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘সামরিক পরিভাষায়, আপনি আক্রমণ করেন, কারণ আপনি আক্রমণকারী শত্রুকে দুর্বল করতে চান, যাতে শুধু আপনার পথে আসা তীরগুলোর সাথেই লড়াই করা যায় না, তীরন্দাজকেও আক্রমণ করা যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সুতরাং, সামরিকভাবে, এমনটি করার একটি ভালো কারণ রয়েছে; শত্রুকে দুর্বল করা, তার সরবরাহ লাইন, জ্বালানি, গোলাবারুদকে যা সামনে আসে তাই মোকাবিলা করা।’ তিনি বলেছিলেন, এই আলোচনার অপর দিকটি ছিল রাজনৈতিক।

যেহেতু অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলো সরবরাহকৃত অস্ত্রের জন্য নিজেদের দায়ী মনে করতে পারে এবং সেই রাজনৈতিক আলোচনা চলতেই থাকে। মস্কোর আক্রমণের ক্ষমতা সীমিত করার জন্য রুশ ভূখণ্ডের গভীরে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মার্কিন এটিএসিএমএস এবং ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডোসসহ পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ার জন্য মিত্রদের অনুরোধ করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার পুতিন বলেছিলেন, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উৎক্ষেপণের প্রকৃত প্রোগ্রামিং ন্যাটো সামরিক কর্মীদেরই করতে হবে। কেননা, কিয়েভের সেগুলো করার ক্ষমতা নেই।
২০৬ বন্দি বিনিময় : এদিকে যুদ্ধরত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গত দুই দিনে ২০৬ জন বন্দী বিনিময় হয়েছে। এই উদ্যোগে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের ১০৩ জন করে বন্দী স্বদেশে ফেরত গেছেন। এতে মধ্যস্থতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ঘটনার জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন তার বাহিনীর সাম্প্রতিক রাশিয়ায় অনুপ্রবেশকে। তিনি অভিযোগ করেছেন, মুক্তিপ্রাপ্ত ১০৩ জন ইউক্রেনীয়কে যুদ্ধের প্রথম মাস থেকেই বন্দী করে রেখেছিল রাশিয়া।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের যে ১০৩ জন সৈন্য ফিরে এসেছে, তাদের কুরস্ক অঞ্চল থেকে বন্দী করেছিল ইউক্রেনীয় বাহিনী। গত আগস্টে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে আচমকা হামলা চালায় ইউক্রেন। মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, আমাদের লোকগুলো বাড়িতে ফিরেছে। আমরা সফলভাবে রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে আরো ১০৩ জন যোদ্ধাকে ফিরিয়ে এনেছি। এ সময় তিনি ইউক্রেনীয় বাহিনী ও বিনিময় পরিচালনাকারী দলকে ধন্যবাদ জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেনের এই বন্দী বিনিময়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। বার্তা সংস্থা ওয়াম জানিয়েছে, চলতি বছর এ ধরনের আটটি ঘটনায় মধ্যস্থতা করেছে আমিরাত। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে উভয় পক্ষ নিয়মিত বন্দী বিনিময় করে আসছে। গত আগস্টে ইউক্রেন রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আন্তঃসীমান্ত হামলা শুরুর পর শনিবারের বন্দী বিনিময় ছিল এ ধরনের তৃতীয় ঘটনা।

 


আরো সংবাদ



premium cement