২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ শাবান ১৪৪৬
`

ভারতের উত্তরপ্রদেশে ১৬৮ বছরের পুরনো মসজিদ ধ্বংস

-

ভারতের উত্তরপ্রদেশে ১৬৮ বছরের পুরোনো একটি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। রথ্যাপিড রেল ট্রানজিট নেটওয়ার্কের জন্য প্রায় ১৭৫ বছরের পুরোনো এই মসজিদটি ভাঙা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশে মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলোর পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ মিরাটে ১৬৮ বছরের পুরোনো একটি মসজিদকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে দিল্লি রোডে অবস্থিত ঐতিহাসিক ধর্মীয় এই স্থাপনাটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। উত্তর প্রদেশ কর্তৃপক্ষ বিতর্কিত এই পদক্ষেপের পক্ষেই কথা বলেছে। তাদের দাবি, মসজিদটি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল পরিবহন করপোরেশন (এনসিআরটিসি)-এর একটি র্যা পিড রেল সিস্টেম (আরআরটিএস) নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করেছিল।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনও ধর্মীয় এই স্থাপনাটি ধ্বংসের অভিযানের পক্ষে কথা বলেছে। তারা বলছে, র্যা পিড রেল নেটওয়ার্কের বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই মসজিদটি অপসারণ করা হয়েছে।

এই বিষয়ে রাজ্যটির মিরাট শহরের পুলিশ সুপার (এসপি) আয়ুশ বিক্রম সিং বলেছেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে বৈঠকের পরে মসজিদটি ধ্বংসের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। তার দাবি, ‘অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সিটি, এনসিআরটিসি কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম এবং অন্যান্য সদস্যসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি বৈঠকের পর এই মসজিদটি ধ্বংস করা হয়েছে।’
তবে ওই এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা এই মসজিদটি ধ্বংসের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, মুসলিম ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক ধ্বংস অভিযান আসলে মুসলিম ধর্মীয় সম্পত্তিগুলোকে টার্গেট করে রাজ্য সরকারের চলমান প্রচেষ্টার একটি বিস্তৃত প্যাটার্নের অংশ। এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে অ্যাডভোকেট শের আফগান বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অবিচার’। সুলতান আখতার নামে অন্য একজন স্থানীয় মুসলিম একই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইল যেমন ফিলিস্তিনে অবকাঠামো ধ্বংস করে, ঠিক তেমনই যোগী আদিত্যনাথের সরকার মুসলমানদের সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করছে।’
এর আগে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশ কর্তৃপক্ষ হাতা নগরের মাদানি মসজিদ ভেঙে দেয়। ডিএসপি কাশ্য কুন্দন সিং এবং বিএসএফ বাহিনীসহ পুলিশ বাহিনীর বিশাল সংখ্যক সদস্যের নজরদারিতে বেশ কয়েকটি বুলডোজার ব্যবহার করে ওই মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। মুসলিম মিরর বলছে, স্থানীয় পুলিশ বলেছে, মুসলিম সম্প্রদায় মসজিদ ভেঙে ফেলার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement