গুয়ানতানামো থেকে দেশে ফিরেছেন ১৭৭ ভেনিজুয়েলান
- সিএনএন
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ধরা পড়া যে ১৭৭ জন ভেনিজুয়েলানকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, তারা একটি প্লেনে বৃহস্পতিবার নিজেদের দেশে পৌঁছেছেন। মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট জানিয়েছে, তাদেরকে ভেনিজুয়েলায় স্থানান্তরের জন্য শুরুতে তাদের হন্ডুরাসে পাঠানো হয়েছিল।
অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চলছে। তাতে ধরা পড়া অভিবাসীদের একটি অংশকে গুয়ানতানামোতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ভেনিজুয়েলানদের দেশে পাঠানোর পর নৌঘাঁটিটি প্রায় খালি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কর্মসূচির বন্দীদের রাখার জন্য বানানো কুখ্যাত কিউবা ঘাঁটিতে অভিবাসীদের পাঠানোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) ভাষ্য, গুয়ানতানামো বেতে যেসব ভেনিজুয়েলানকে পাঠানো হয়েছিল, তাদের সাথে ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাংয়ের সম্পর্ক রয়েছে, যে অপরাধ চক্রটির যাত্রা হয়েছিল ভেনিজুয়েলার একটি কারাগারে।
ভেনিজুয়েলা সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, যেসব ভেনিজুয়েলানকে ‘অন্যায়ভাবে গুয়ানতানামো নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল’- তাদেরকে ফেরত দিতে ভেনিজুয়েলা অনুরোধ জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার যে দলটি এসেছে তারা অপরাধী নয়, তারা খারাপ মানুষ নয়, তারা এমন মানুষ যারা (যুক্তরাষ্ট্রের) নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশত্যাগ করেছে... তাদেরকে অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে আমরা তাদের ভালোবাসার সঙ্গে স্বাগত জানাই।’
ট্রাম্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, গুয়ানতানামো বে তাদের জন্য, যারা ‘সবচেয়ে খারাপের মধ্যে খারাপ’। তবে আদালতের নতুন নথিপত্র অনুযায়ী, সেখানে যাদের পাঠানো হচ্ছে, তাদের সবাই ‘উচ্চ হুমকি’ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন না।
নথি অনুযায়ী, ১২৭ জনকে ‘উচ্চ হুমকি হিসেবে’ বিবেচনা করা হয়েছিল এবং ঘাঁটির সর্বাধিক সুরক্ষিত কারাগারে রাখা হয়েছিল। বাকি ৫১ জনকে ‘নিম্ন থেকে মাঝারি হুমকি’ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন, যাদেরকে অভিবাসী অপারেশন কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল। তারা সবাই ভেনিজুয়েলা থেকে আসা। মানবিক ত্রাণ সুরক্ষা কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বুধবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে একদল ভেনিজুয়েলান, যারা ওই কর্মসূচির সুবিধাভোগী ছিলেন।
সাময়িক সুরক্ষা হিসেবে পরিচিত সুবিধাটি পেয়ে থাকেন নির্দিষ্ট কিছু অভিবাসী। চলতি মাসের শুরুর দিকে সুবিধাটি বাতিল করেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। সংস্থাটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম ওই সুবিধার মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাইডেন প্রশাসনের সময় চালু করা ওই সুবিধা বাতিল হওয়ায় প্রায় ছয় লাখ মানুষ চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভেনিজুয়েলানের সুরক্ষা মেয়াদ এপ্রিলে শেষ হয়ে যাবে, তাতে তারা প্রত্যাবাসনের মুখে পড়বেন। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ ভেনিজুয়েলানকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।