জেলেনস্কিকে অবশ্যই খনিজ চুক্তি করতে হবে : মাইক ওয়াল্টজ
- এএফপি
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আবার আলোচনায় বসতে হবে এবং ইউক্রেনের খনিজসম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করতে হবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের বিরল খনিজসম্পদের অংশীদারিত্ব দাবি করলে গত বুধবার জেলেনস্কি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ওই চুক্তি করলে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন থাকবে।
মাইক ওয়ালটজ বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের এক ব্রিফিংয়ে ওই মন্তব্য করেন। তার ওই মন্তব্য কিয়েভে জেলেনস্কি ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনবিষয়ক প্রধান দূত কিথ কেলোগের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের গুরুত্বকে ছাপিয়ে যায়। ওয়াল্টজ বলেন, সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ অপমান করার কারণে হোয়াইট হাউজ ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি ‘খুব হতাশ’।
ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও খনিজসম্পদে পরিপূর্ণ। সেসবের মাঝে যেমন লিথিয়াম ও টাইটানিয়াম আছে, পাশাপাশি অনেক বড় পরিসরে কয়লা, গ্যাস, তেল ও ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে- যার বাজার মূল্য কয়েক বিলিয়ন ডলার। বৃহস্পতিবারের আগে ওয়াল্টজ পরামর্শ দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রকে তার খনিজসম্পদে প্রবেশ করার অধিকার দেয়, তাহলে তাদেরকে মার্কিন সহায়তা দেয়া যেতে পারে অথবা ইতোমধ্যে যে মার্কিন সহায়তা দেয়া হয়েছে, এটিকে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
‘আমরা ইউক্রেনীয়দের সত্যিই একটি অবিশ্বাস্য ও ঐতিহাসিক সুযোগ দিয়েছি’ উল্লেখ করে মাইক ওয়াল্টজ বলেন, এটি ‘টেকসই’ এবং ইউক্রেনের জন্য ‘সেরা’ নিরাপত্তাব্যবস্থা। কিন্তু জেলেনস্কি এই প্রস্তাবকে নাকচ করে বলেন, ‘আমি আমাদের রাষ্ট্রকে বিক্রি করতে পারি না’।
কিয়েভে কিথ কেলোগের সাথে জেলেনস্কির বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে ইউক্রেনীয় নেতা ঘোষণা করেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তি’ করতে প্রস্তুত, যা ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে সাহায্য করবে।
এরপর মাইক ওয়াল্টজ হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন। জেলেনস্কি কিয়েভের বৈঠকটিকে ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন ঠিকই, কিন্তু এটিকে অনেকটা অপ্রতিভ রাজনৈতিক সাক্ষাতের মতো মনে হচ্ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষের সিনিয়র নেতারা যখন সরাসরি মস্কোর সাথে যোগাযোগ করছিল, তখন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কেলোগ বলেন, তিনি কিয়েভে কেবল ‘শুনতে’ গিয়েছিলেন। কিন্তু এটি খুব দ্রুতই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তিনি প্রকাশ্যে কিছু বলবেন না। কারণ শেষ মুহূর্তে একটি সংবাদ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের পর জেলেনস্কি জানান, তিনি কানাডা, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। এক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে ইউক্রেন সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’ অন্য দিকে কিথ কেলোগ কেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাননি, তার সম্ভাব্য কারণগুলো উঠে আসছে। কেলোগের এই বৈঠক এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে হয়েছে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র বাক্যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনের নেতাকে ‘অনির্বার্চিত একনায়ক’ বলে আক্রমণ করেছেন। ট্রাম্প আরো দাবি করেন, এ যুদ্ধের জন্য জেলেনস্কিই দায়ী।