যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে পাল্টা আঘাত চীনের
- রয়টার্স
- ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপের পর ত্বরিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কিছু পণ্যে নতুন করে মাশুল বসিয়েছে চীন। দেশটির এ পদক্ষেপে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ নতুন করে উসকে উঠেছে।
ওয়াশিংটন আমদানিকৃত চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্প আরোপের কয়েক মিনিটের মধ্যে আমদানিকৃত মার্কিন পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্প আরোপ করেছে বেইজিং। গতকাল মঙ্গলবার থেকে এই শুল্ক কার্যকরও করা হয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগে থেকেই চীন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের পর তিনি ঘোষণা করেন, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। পরে সোমবার শেষ মুহূর্তে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থহিত করেন ট্রাম্প, কিন্তু চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে তা জারি রাখেন। ফলে আন্তর্জাতিক সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের মাদক পাচারের প্রবাহ থামাতে তারা কিছু করছে না, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেইজিংকে বারবার এমনটি বলে সতর্ক করার পর চীন থেকে আমদানি করা সব ধরনের পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তার ওই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে।
এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কয়লা ও এলএনজির ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত খনিজ তেল, খামারের সরঞ্জাম ও কিছু গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। চীন আরো জানায়, তারা মার্কিন কোম্পানি অ্যালফাবেটে ইনকর্পোরেটের গুগলের বিষয়ে মনোপলিবিরোধী তদন্ত শুরু করছে, পাশাপাশি কেলভিন ক্লেইন ব্রান্ডের কোম্পানি পিভিএইচ কর্পোরেশন ও মার্কিন বায়োটেকনোলজি কোম্পানি ইলুমিনাকে ‘আস্থাস্থাপনের অযোগ্য সত্তার তালিকায়’ যুক্ত করছে। পৃথকভাবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও তাদের কাস্টমস প্রশাসন জানিয়েছে, তারা উচ্চ প্রযুক্তির গ্যাজেট তৈরি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিরল মৃত্তিকা ও ধাতুর রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব রফতানি পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে তা ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া শুরু হবে। এতে ওয়াশিংটন ও বেইজিং একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করার কিছুটা সময় পাবে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের পরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে কথা বলার পরিকল্পনা করেছেন। সোমবার শেষ মুহূর্তের রফায় মেক্সিকো ও কানাডার ওপর আরোপিত বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের ডঙ্কা উত্তর আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বের অর্থনীতিতে যে মারাত্মক অভিঘাতের হুমকি তৈরি করেছিল, তা কিছুদিন স্থগিত থাকছে। ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওপরও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা আছে বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন। ইইউ জোট যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভালো আচরণ করেনি বলে অভিযোগ মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এর আগে প্রথম মেয়াদে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প, সে সময় ২০১৮ সালে রীতিমতো ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। এ যুদ্ধের প্রধান কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার আমদানি-রফতানির ভারসাম্যহীনতা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা