ইতিহাসের সর্বনিম্নে ভারতীয় মুদ্রার দর
- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও রয়টার্স
- ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরো কমে ৮৬ দশমিক ২০ এ দাঁড়িয়েছে, যাকে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায় বলা হচ্ছে। ডলারের শক্তিশালী অবস্থান ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে অর্থ প্রত্যাহার রুপির এই মান পতনের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আবার বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও দেশীয় শেয়ারবাজারের নেতিবাচক প্রবণতাও রুপির ওপর প্রভাব ফেলেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় বলা হয়, ভারতীয় রুপি আরো দুর্বল হয়ে ডলারের বিপরীতে ৮৬-তে নেমে যেতে পারে। মাত্র ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই, সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়। শুক্রবার ১৪ পয়সা পতন হয় রুপির। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে ভারতের পুঁজিবাজার মহাসঙ্কটে পড়েছে। রুপির এই দরপতনের পাশাপাশি শেয়ারবাজারেরও পতন হচ্ছে লাগাতার। শুক্রবার সেনসেক্স ২৪১ দশমিক ২০ পয়েন্ট পড়ে ৭৬ হাজারের দোরগোড়ায় চলে এসেছে; ৭৭ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৯১ অঙ্কে নেমেছে।
গত তিন দিনে সূচকটি পড়েছে মোট ৮২০ পয়েন্ট। বাজারের মূলধন কমেছে ১২ লাখ কোটি রুপি। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা মোট ১২ হাজার ৭৮৭ দশমিক ৭৩ কোটি রুপি পুঁজি তুলে নিয়েছে। সেটাই রুপির অবমূল্যায়নের অন্যতম কারণ। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এভাবে শেয়ার বিক্রি নিয়ে শুক্রবার মোদি সরকারের সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, হিসাব অনুযায়ী নতুন বছরের প্রথম কয়েক দিনেই শেয়ারবাজার থেকে ২০০ কোটি ডলারের পুঁজি তুলে নিয়েছে ওই সব বিদেশী ঋণদানকারী সংস্থাগুলো। ফলে সূচক আরো নিচে নেমেছে।
শুক্রবার শেষ হওয়া সপ্তাহে সেনসেক্সের নিট পতন হয়েছে এক হাজার ৮৪৪ দশমিক ২ পয়েন্ট, নিফটির ৫৭৩ দশমিক ২৫। আপাতত রুপি ও শেয়ারবাজার- উভয়ই অস্থির থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতি তাদের পরামর্শ, আপাতত শেয়ার কেনা বন্ধ রাখাই ভালো। মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বাড়ছে এবং বন্ডের বিপরীতে অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দর কমছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আইডিএফসি ফাস্টর্ ব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশী বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়েছে, শেষ প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার। এর আগের প্রান্তিকে ভারতে ২০ বিলিয়ন বা দুই হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল। এসব কারণে রুপির ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
ফরেক্স বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামীতেও রুপির ওপর এমন চাপ অব্যাহত থাকতে পারে। দেশীয় শেয়ারবাজারের দুর্বলতা, বিদেশী বিনিয়োগ প্রত্যাহার ও অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি এই চাপের কারণ হবে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কিছুটা স্থিতিশীলতা আনতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা