গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৩৪১ ত্রাণকর্মী নিহত
- আলজাজিরা
- ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বন্দীদের মুক্তি না দিলে গুরুতর পরিণতির হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
ইসরাইলের এক বছরের অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩ বন্দী
গত বছর অক্টোবরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪১ জন মানবিক সহায়তা কর্মী নিহত হয়েছেন। জাতিসঙ্ঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফানি দ্যুজারিক এ কথা বলেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে দ্যুজারিক বলেছেন, সর্বশেষ ইসরাইলি বিমান হামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের তিন কর্মী ও সেভ দ্য চিলড্রেনের একজন কর্মীসহ মোট চারজন মানবিক সহায়তা কর্মী নিহত হয়েছেন। এর ফলে গত বছরের অক্টোবর থেকে নিহত মানবিক সহায়তা কর্মীর সংখ্যা বেড়ে ৩৪১-এ পৌঁছেছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মানবিক সহায়তা সরবরাহকারী অংশীদাররা পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে সতর্ক করেছেন। সামরিক বাহিনীর স্থল অভিযান, বেসামরিক এলাকায় বোমা হামলা ও অবিস্ফোরিত বোমার উপস্থিতির কারণে স্থানীয় খাদ্যব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের : নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলি বন্দীদের আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে মুক্তি না দেয়া হলে চরম মূল্য দিতে হবে। সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে দেয়া এক পোস্টে এমন হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে। গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনের পর এটি ছিল গাজায় চলমান যুদ্ধের বিষয়ে তার সবচেয়ে কঠোর বক্তব্য।
খবর পাওয়া গেছে যে, তিনি তার দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শুরু হওয়ার আগে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। পোস্টে ট্রাম্প ‘শুধু কথা, কাজ নেই’ উল্লেখ করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনকে কটাক্ষ করেন। তিনি লেখেন, ‘আগামী ২০ জানুয়ারির আগে জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া হলে মধ্যপ্রাচ্যে চরম মূল্য দিতে হবে। যারা এই মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো সংঘটিত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখনই বন্দীদের মুক্তি দাও!’
প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩ বন্দী : গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর (আইডিএফ) গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালাতে থাকা আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দী নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন বা হামাস সোমবার জানিয়েছে এ তথ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দী প্রাণ হারিয়েছেন। গাজায় যে মাত্রার ধ্বংসকাণ্ড চলছে, তাতে তাদের দেহাবশেষও আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
কবে কতজন বন্দী নিহত হয়েছেন সেই তালিকাও প্রদান করেছে হামাস। সেটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর চারজন, ১৪ অক্টোবর ৯ জন, ৮ ডিসেম্বর একজন, ২০২৪ সালের ১ মার্চ সাতজন, ৯ জুন তিনজন, আগস্ট মাসে তিনজন, ২ সেপ্টেম্বর ছয়জন নিহত হয়েছেন। এই বন্দীদের মধ্যে ১০৭ জনকে গত বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত এক অস্থায়ী বিরতিতে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর গত এক বছরে কয়েকজন বন্দীকে উদ্ধার করতে পেরেছে ইসরাইলি বাহিনী, কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বর্তমানে হামাসের কব্জায় ১০১ জন বন্দী রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে কতজন বন্দী জীবিত রয়েছেন, তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি হামাস। তবে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ করে টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়েছে, ‘যদি আপনি নিজের জেদ থেকে সরে না দাঁড়ান এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি না দেন, সে ক্ষেত্রে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। তাই বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগে যা উচিত, তা করুন।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা