ইসরাইলকে জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান
- রয়টার্স
- ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ইসরাইলকে যথাযথ জবাব দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সিনিয়র উপদেষ্টা আলি লারিজানি এ দাবি করেছেন। তবে প্রতিক্রিয়ার ধরন বা পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেননি। সংবাদ সংস্থা তাসনিমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই জবাব দেবে ইরান।
ইরান পূর্বে ঘোষণা করেছে যে, ২৬ অক্টোবর তাদের সামরিক স্থাপনায় ইসরাইলি হামলার প্রতিশোধ নিতে তারা পদক্ষেপ নেবে। ইরান থেকে ১ অক্টোবর ছোড়া প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় ওই হামলা হয়েছিল। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরাইলে সামরিক স্থাপনার তুলনামূলক কম ক্ষতি করলেও কিছু আবাসিক এলাকায় আঘাত হানে। এতে পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনি নিহত হন।
ইরানের হিজবুল্লাহ নেতা ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ওই হামলা চালানো হয়। এদিকে, লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডার হ্রাস পাচ্ছে বলে ইসরাইলি দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন লারিজানি। তিনি ওই দাবিকে কটাক্ষ করে বলেন, তাহলে অস্ত্রগুলো কি মঙ্গলগ্রহ থেকে আসছে!
নেতানিয়াহুর মৃত্যুদণ্ড চান খামেনি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে কেবল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিই যথেষ্ট নয়। তার বিরুদ্ধে মৃত্যুর পরোয়ানা জারি করা উচিত। গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র বিরোধিতাকারী ও হামাস-হিজবুল্লাহকে সমর্থনকারী ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতা গতকাল সোমবার বলেন, ‘ইসরাইলি নেতাদের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা যথেষ্ট নয়, বরং তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া উচিত।’
গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এ কথা বলেন। আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইসরাইলি নেতাদের নির্দেশ করে বলেন, ‘তারা (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, এটা যথেষ্ট নয়...এই অপরাধী নেতাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বা পরোয়ানা জারি করা উচিত।’
আইসিসির বিচারকরা তাদের রায়ে বলেন, গাজার বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক ও পরিকল্পিত আক্রমণের’ অংশ হিসেবে হত্যাকাণ্ড, নিপীড়ন এবং ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্তের অপরাধমূলকভাবে দায়ী বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে ইসরাইলে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এই রায়কে লজ্জাজনক এবং অযৌক্তিক বলে আখ্যা দিয়েছে। গাজার বাসিন্দারা আশা করেছেন যে, এটি সহিংসতার অবসান ঘটাতে এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে সহায়তা করবে। ইসরাইল হেগভিত্তিক আদালতের এখতিয়ার অস্বীকার করেছে এবং গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।