ইসরাইলের প্রাচীনতম পত্রিকার ওপর নেতানিয়াহুর নিষেধাজ্ঞা
- দ্য গার্ডিয়ান
- ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ইসরাইলি প্রাচীনতম সংবাদমাধ্যম হারেৎজের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন এবং সরকারি অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোকে পত্রিকাটির সাথে যোগাযোগ বা বিজ্ঞাপন দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নেতানিয়াহুর সরকার। স্থানীয় সময় গত রোববার দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহির এ সংশ্লিষ্ট একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেন নেতানিয়াহু। হারেৎজ পত্রিকাটি মূলত বামপন্থী ঘরানার। নেতানিয়াহু সরকার বলছে, ইসরাইল রাষ্ট্রের বৈধতা ও আত্মরক্ষার অধিকারকে আঘাত করেছে এমন অনেক অনুচ্ছেদ প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।
বিশেষ করে হারেৎজের প্রকাশক আমোস শোকেন সম্প্রতি লন্ডনে ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে একটি মন্তব্য করেন। ‘ইসরাইলি সরকার সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি, সেই সাথে সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও আহ্বান জানান। এমন প্রেক্ষাপটে হারেৎজের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের মতো ঘটনা এবং নিষেধাজ্ঞা এলো। নেতানিয়াহুর যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি এক বিবৃতিতে বলেছেন, হারেৎজের বিরুদ্ধে তার প্রস্তাব অন্যান্য মন্ত্রীরাও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছেন।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় হারেৎজ বলেছে, এটি হারেৎজকে বয়কট করার একটি সুবিধাবাদী প্রস্তাব। সরকারি বৈঠকে কোনো ধরনের আইনি পর্যালোচনা ছাড়াই এই আইন পাস হয়েছে। এটি ইসরাইলি গণতন্ত্রকে ভেঙে ফেলার জন্য নেতানিয়াহুর ধারাবাহিক যাত্রায় আরো একটি পদক্ষেপ। ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হারেৎজ ইসরাইলের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংবাদপত্র। পত্রিকাটি ঊর্ধ্বতন ইসরাইলি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর অপরাধমূলক কার্যকলাপের ওপর বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের সাথে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। গাজা যুদ্ধের অবসান এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতেও সোচ্চার সংবাদমাধ্যমটি। হারেৎজের কলামিস্ট গিডিওন লেভি আল জাজিরাকে বলেছেন, পত্রিকার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞাগুলো রাজনৈতিক ও নৈতিকভাবে উভয়ই খুব খারাপ বার্তা দেয়। অনেকে এটিকে (হারেৎজ) ইসরাইলের একমাত্র সংবাদপত্র হিসাবে দেখেন। কারণ, বিশেষত (গাজা যুদ্ধে) প্রায় সমস্ত মিডিয়া সরকার এবং সেনাবাহিনীর বিবরণে নিজেকে সপে দিয়েছিল। গাজায় কী ঘটছে তা ইসরাইলিদের দেখায়নি।
গত মাসে লন্ডনে এক সম্মেলনে হারেৎজ-এর প্রকাশক শোকেন আরো বলেছিলেন, নেতানিয়াহুর সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিষ্ঠুর বর্ণবাদী শাসন চাপিয়ে দেয়ার বিষয়ে একবারও চিন্তা করে না। এ দিকে নেতানিয়াহু সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি পত্রিকাটি বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে নতুন করে প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত, যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরাইল গণমাধ্যমের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বিশেষ করে আল জাজিরার ইসমাইল আল-ঘৌল, রামি আল-রিফি, সামির আবুদাকা এবং হামজা দাহদৌহসহ গাজায় কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা