২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পারমাণবিক কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা ইরানের

-

আন্তর্জাতিক অ্যাটোমিক শক্তি সংস্থা ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। এতে বলা হয়েছে, পারমাণবিক ইস্যুতে তেহরান অসহযোগিতা করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান নতুন ও অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ সক্রিয় করার ঘোষণা দিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থাটিতে প্রস্তাবটি সামনে নিয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জুনেও ইরানের বিরুদ্ধে এ ধরনের একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছিল। ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা ও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাব পাসের নিন্দা জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার ইরানের পারমাণবিক প্রধান মোহাম্মদ এসলামি নতুন ও উন্নত সেন্ট্রিফিউজ চালু করার আদেশ জারি করেছেন, যা দ্রুত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএইএ এর সাথে অতীতের মতো সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই সপ্তাহে ইউরোপীয় দেশগুলোর ২০২০ সালের পর তাদের চতুর্থ প্রস্তাব পাস করার প্রচেষ্টার নিন্দা করেছেন।
ইরানের কাছে বিপজ্জনক অস্ত্র থাকা উচিত না : ইসরাইল
তবে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য চাপ বাড়াতে জাতিসঙ্ঘের পরমাণু সংস্থাকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসনব্যবস্থার কাছে সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্র থাকা উচিত না।’
এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গত মাসে ইরানে ইসরাইলের বিমান হামলা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটি ‘উপাদানে’ আঘাত করেছে। তবে ইরান আইএইএর নিন্দার কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছে, তারা ‘নতুন এবং উন্নত সেন্ট্রিফিউজ’-এর একটি সিরিজ চালু করবে।
ইসরাইলের সাথে ইরানের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে আইএইএ। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে তেহরান।
মঙ্গলবার আইএইএর প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, পরমাণু বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামের মজুদ ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে ইরান। পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে প্রয়োজন হয় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের, যেটির পরিমাণ প্রায় ১৮৫ কেজি। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এরই মধ্যে ৬০ শতাংশ উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদ করে ফেলেছে তেহরান, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়েও ৩২ গুণ বেশি।
ইরানের পরমাণু সক্ষমতার লাগাম টানতে ২০১৫ সালে দেশটির সাথে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি। তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্ঘাতের জেরে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখেনি চুক্তিটি। ২০১৮ সালে তো ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বিশেষজ্ঞের উদ্ধৃতি দিয়ে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে ইসরাইলে ইরানের হামলার ঘটনার পর থেকে দেশটির পরমাণু সক্ষমতার মাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা দেশগুলো। গত সপ্তাহেই ইরান সফর করেছেন আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। এরপরই তেহরানের ইউরেনিয়াম সক্ষমতা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে সংস্থাটি। এছাড়া, অক্টোবরে তেল আবিবে তেহরানের হামলার প্রায় এক মাস পর পরমাণু মজুদের বিষয়ে সতর্ক করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও। ইউরোপের এই তিন দেশের হস্তক্ষেপকে কূটনৈতিকভাবে মোকাবেলার কথা জানিয়েছে ইরান।


আরো সংবাদ



premium cement