২ সপ্তাহের মধ্যে লেবাননে যুদ্ধবিরতি হতে পারে
হামলা আতঙ্কে উত্তরাঞ্চলের মেটুলা শহরে সফর বাতিল নেতানিয়াহুর- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহর সাথে সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে আগামী ১০-১৪ দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে ইসরাইল। গতকাল সোমবার টাইমস অব ইসরাইলের খবর অনুসারে দেশটির চ্যানেল টুয়েলভকে একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে। হিজবুল্লাহ প্রায় প্রতিদিনই ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জন্য তেলআবিবকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে, যা লেবানন-ইসরাইল সীমান্তের উভয় দিক শান্ত হবে।
এরইমধ্যে জানা গেছে, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র চুক্তির একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এই চুক্তি জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের 'রেজলিউশন ১৭০১' পূর্ণ বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইসরাইল এবং মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন, অব্যাহত হামলার মুখে হিজবুল্লাহ বর্তমানে হামাসের সাথে নিজেদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। যেহেতু গত দুই মাসে লেবাননভিত্তিক সংগঠনটি কিছু বহুমুখী হামলার সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে তাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহ এবং সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিয়েদ্দিনসহ অসংখ্য কমান্ডারের মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় ৩৬ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র আক্রান্ত হয়েছে। এসব হামলায় ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কর্তব্যরত অবস্থায় ৮৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত এবং ৫১ জন আহত হয়েছেন।ওসিএইচএ আরো জানিয়েছে, ২০০৬ সালে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধের চেয়ে লেবাননের বর্তমান মানবিক পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। লেবানন কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে তিন হাজার। আর আহত হয়েছে আরো ১৪ হাজারের কাছাকাছি। বিশ্ব সম্প্রদায় অনতিবিলম্বে লেবাননে যুদ্ধবিরতি দেখতে চায়।
সফর বাতিল নেতানিয়াহুর :
হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলার ভয়ে সফর বাতিল করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রোববার উত্তর ইসরাইলে ছিলেন নেতানিয়াহু। সেখানকার উত্তরাঞ্চলের শহর মেটুলায় সফর করার কথা ছিল তার। যাওয়ার ২০ মিনিট আগে ওই এলাকার একটি সেনা ছাউনিতে ড্রোন হামলা হয়। ফলে ভয়ে সফর বাতিল করেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা শুরুর পর অনেকটাই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। লেবাননে হামলার পর থেকে তা আরো বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগে নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। লেবানন থেকে ধেয়ে আসা ড্রোনটির হামলায় কেউ হতাহত না হলেও তাতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে এই হামলার দায় নেয় লেবাননের প্রতিরোধ সংগঠন হিজবুল্লাহ। এই হামলার সময় নেতানিয়াহু বা তার পরিবারের কোনো সদস্য বাসায় ছিলেন না।
ইরাক থেকে হামলা :
এদিকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা গতকাল সোমবার সকালে অধিকৃত গোলান মালভূমিতে ‘পূর্ব দিক থেকে’ আসা কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধ করেছে। ইসরাইলের দাবি অনুসারে ওই হামলাগুলো ইরাক থেকে করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ইরান-সমর্থিত ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের সমর্থনে ইসরাইলের ওপর ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী আরো বলেছে, তারা লেবানন থেকে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও প্রতিরোধ করেছে। এছাড়া দক্ষিণ লেবাননের বারাচিট এলাকায় আবু আলী রিদা নামে হিজবুল্লাহর একজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছ এ দখলদার সেনাবাহিনী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা