ইসরাইলে হামলার জেরে ইরানের তেল খাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
- রয়টার্স
- ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞার পরিসর বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে গত শুক্রবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, ‘এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ইরানের জ্বালানি তেল বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে অবৈধভাবে পৌঁছে দেয়া ‘ভৌতিক জাহাজ বহরের’ (ঘোস্ট ফ্লিট) বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দ্বার উন্মোচিত হলো। ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকেও তারা আর সমর্থন দিতে পারবে না।’
১ অক্টোবরের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরাইল। লেবানন ও গাজায় চলমান আগ্রাসন এবং ইরানের মাটিতে হামলা চালিয়ে হামাস নেতাকে হত্যা করায় ইসরাইলকে ‘সমুচিত জবাব’ দিতে ওই হামলা চালিয়েছিল তেহরান। প্রতিশোধের জন্য ইরানের তেলক্ষেত্রে হামলা না করে বরং বিকল্প কোনো উপায় ইসরাইলের বেছে নেয়া উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তেলক্ষেত্রে হামলা করা থেকে ইসরাইলকে বিরত রাখতে ওয়াশিংটনের সাথে দেনদরবার করছে উপসাগরীয় দেশগুলো।
তাদের আশঙ্কা, এ হামলা হলে তেহরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোও সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে যাবে এবং সঙ্ঘাতের ব্যাপ্তি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে। তখন তাদের নিজেদের তেলক্ষেত্র ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। ইউএস ট্রেজারি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের সাথে সম্পৃক্ত যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে তারা। ট্রেজারি বিভাগ আরো জানিয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ততার জন্য ১৬টি সংস্থা ও ১৭টি জাহাজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বাইডেনের আমলে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবসা করতে সমর্থ হয়েছে ইরান। পাশাপাশি চীন তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা হয়ে উঠেছে। ফলে ইরানের তেল রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক রাজনৈতিক ঝুঁঁকি নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপ বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জোরদার করতে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে মার্কিন প্রশাসন।
তবে এ পন্থা অবলম্বন করলে দুই অংশীদার, মালয়েশিয়া ও আমিরাতের ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে হবে। অথচ ইসরাইলের পক্ষে যায় এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে এ দুইদেশ আবার রাজি নয়। সংস্থাটি আরো বলেছে, ইরানের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন কিনে থাকে।