২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নেতানিয়াহুর গাজা আগ্রাসন মানবতার জন্য লজ্জার : এরদোগান

নেতানিয়াহুর গাজা আগ্রাসন মানবতার জন্য লজ্জার : এরদোগান -

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, গত এক বছর ধরে গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা সমগ্র মানবতার জন্য অতি লজ্জার। নেতানিয়াহু সরকারের নেতৃত্বে গাজা আগ্রাসন এখন মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে বিশ্বব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ ডি রামার সাথে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এরদোগান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলব- আমাদের অবশ্যই অবিলম্বে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দিতে এবং ইসরাইলের ওপর প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আবারো ‘গাজার কসাই’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং তাকে নাৎসি জার্মানির অ্যাডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন। এরদোগান বলেন, গাজায় ইসরাইলি বাহিনী বর্বরোচিত গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি মানবতার জন্য চরম লজ্জার।
তিনি আরো বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আমাদের অবশ্যই অবিলম্বে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা দিতে এবং ইসরাইলের ওপর প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।’ বৃহস্পতিবার দিনের শেষে এরদোগান আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামার সাথে তিরানার গ্রেট মসজিদ উদ্বোধন করেন।
বলকানের বৃহত্তম বৃহত্তম এই মসজিদের ধারণক্ষমতা ১০ হাজার জন। তুরস্কের অর্থায়নে এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩০ মিলিয়ন ইউরো। তুরস্ক আলবেনিয়ার প্রধান জনশক্তি নিয়োগকারী দেশ। এরদোগান গত ফেব্রুয়ারিতে বলেছেন, ছয় শতাধিক তুর্কি কোম্পানি তার দেশে ১৫ হাজারেরও বেশি কর্মীকে চাকরি দিচ্ছে। তিনি বলেন, এটি আলবেনিয়ার পাঁচটি বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি। তুরস্ক আলবেনিয়ায় ৩৫০ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ন্যাটো সদস্য দু’টি দেশের মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক। তুরস্ক তার বায়রাক্টার টিবি-২ ড্রোন তিরানায় সরবরাহ করে। তিরানা থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ৬৫ জন ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো ৯৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসঙ্ঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সঙ্কটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement