যমুনার ভাঙন রোধে নেই পদক্ষেপ, আতঙ্কে নদীপাড়ের বাসিন্দারা
- খাদেমুল বাবুল, জামালপুর
- ২২ জুন ২০২৪, ১৬:৫৪
জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। গত তিন সপ্তাহে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নে তীব্র ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও কয়েক’শ একর ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে অন্তত দেড় হাজারেও অধিক পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, ভাঙন ঠেকাতে সমন্বিত সমীক্ষা প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব হবে।
এলাকাবাসী জানান, গত দুই সপ্তাহ আগেও এখানে ছিল একটি সড়ক ও অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর। ছিল কয়েক’শ একর ফসলি জমিও। নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদী রাক্ষসী রূপ ধারণ করে। একের পর এক গ্রাস করতে থাকে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। বর্তমানে এর কিছুই নেই এখানে। শুধু অথই পানি আর পানি।
তারা বলেন, গত তিন সপ্তাহে অর্শতাধিক ঘরবাড়ি গ্রাস করেছে যমুনা নদী। ঘরবাড়ি-ভিটামাটি ও ফসিল জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার।
যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাতাকিয়া, কাজলাপাড়া, মণ্ডল বাজার, বরখাল, হাজারীগ্রাম, খানপাড়া, পলাশপুর, জালিপাড়া ও মাঝিপাড়া গ্রামে ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে যমুনার তীব্র ভাঙ্গন। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। ইতোমধ্যে একটি প্রাইমারি স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, ডাকাতিয়া গুচ্ছগ্রাম, আদর্শ গ্রামসহ ১০টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
বরখাল গ্রামের সামচুল ইসলাম বলেন, বরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় আমাদের গর্ব, আমাদের স্মৃতি। আমাদের ঘরবাড়ি, জমিজিরাত তো গেছেই। এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষা না হলে আমাদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগও থাকবে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক ধরে বছরে এই অঞ্চলে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার । ভাঙন রোধে দ্রুত সময় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার এটাই প্রত্যাশা তাদের।
পলাশপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রামের বেশিভাগ নদীতে ভাইংগা গেছে। যেখানি আছে, এই খানি আর যেন না যায় সরকারের কাছে এইডাই দাবি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক ধরে বছরে এই অঞ্চলে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। ভাঙন রোধে দ্রুত সময় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার এটাই প্রত্যাশা তাদের।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, বরখাল এলকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু স্থাপনা নদী ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য ২০০ মিটার এলাকা তাৎক্ষণিক জিও ব্যাগ ড্রম্পিং এর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া সার্বিক ভাবে যমুনার বামতীর সংরক্ষণের জন্য সমন্বিত একটি সমীক্ষা প্রকল্প প্রক্রিয়া দিন রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নয়। জেলার যমুনার তীরবর্তী ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি স্পটে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা