২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ছে জামালপুরের লাউ চাপড়া অবকাশ কেন্দ্র

- ছবি : নয়া দিগন্ত

জামালপুরের বকশিগঞ্জের ভারতীয় সীমান্তবর্তী সারি সারি গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জেলার একমাত্র সরকারি অবকাশ কেন্দ্র লাউ চাপড়া। জেলা ও সারাদেশের ভ্রমন পিয়াসু মানুষ এবং অবসরকালীন আনন্দ-বিনোদনের জন্য জামালপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে সুউচ্চ পাহাড়ি টিলা ও সবুজ শ্যামলে ঘেরা লাউ চাপড়া নামস্থানে গড়ে তোলা হয় লাউ চাপড়া অবকাশ-বিনোদন কেন্দ্র। কিন্তু রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থা, শিশুদের বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় দর্শনীয় অবকাঠামো, পর্যটকদের জন্য নিরাপদ বিশ্রামাগার, নামাজ আদায়ের কোনো মসজিদ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা নারী-পুরুষের প্রয়োজনীয় শৌচাগার নির্মাণ না করায় দিন দিন পর্যটক ও দর্শনার্থী হারাচ্ছে জেলার একমাত্র সরকারি অবকাশ কেন্দ্রটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, দু’টি ওয়াস টাওয়ার, ছোট একটি কৃত্রিম লেগ, পাহাড়ের কয়েকটি ছোট বড় প্রাকৃতিক টিলা, সারি সারি সবুজ পাহাড়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি রেস্ট হাউস এবং গারো আদিবাসী এক নারীর ভাস্কর্য ছাড়া তেমন কিছু নেই সম্ভাবনাময় এই অবকাশ কেন্দ্রে।

স্থানীয়রা জানায়, আগে এক সময় পর্যটন ও ভ্রমণ পিপাসুরা দলে দলে এই অবকাশ কেন্দ্রে আসলেও আনন্দ বিনোদনের প্রয়োজনীয় সুযোগ না থাকায় দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে জেলার একমাত্র সরকারি অবকাশ কেন্দ্র লাউ চাপড়া।

সাইদুল ইসলাম নামে বেড়াতে আসা একজন পর্যটক বলেন, ‘গারো পাহাড়ের পাদদেশ ও ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় অবকাশ কেন্দ্রটি স্থাপন করায় শীত মৌসুম শুরু হলেও পর্যটকদের ভীড় পড়ে যেতো। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ এবং অবকাশ কেন্দ্রে আনন্দ বিনোদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় এখন আর আগের মতো লোকজন আসে না।’

স্থানীয় এক গারো আদিবাসী জানান, ‘বিকেল ৪টা বাঁজলেই অবকাশে আগত লোকজন দ্রুত চলে যায়। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘এখানে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। তাই বন্য হাতি, বন্যপ্রাণী এবং ছিনতাইকারীদের ভয়ে দিনে দিনেই চলে যান মানুষজন।’

অবকাশে আগত টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি এলাকার পর্যটক মহিবুল্লাহ বলেন, ‘বেশ কিছু বন্ধু অনেক শখ করে লাউ চাপড়া এসেছিলাম আনন্দ বিনোদনের জন্য। কিন্তু এসে দেখি এখানে তেমন কিছু নেই। তাই পাহাড় টাহার ঘুরে মন খারাপ করে চলে যাচ্ছি।’

মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তা-ঘাটও ভালো না। এখানে আসতে অনেক কষ্ট। অনেক সুন্দর জায়গা এটা। রাস্তা-ঘাট মেরামত করলে এবং বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হলে বহু লোক আসবে এখানে।’

জামালপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুন মুন জাহান লিজা বলেন, ‘লাউ চাপড়া অবকাশ কেন্দ্রটি একটি অত্যান্ত সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র। এই অবকাশ কেন্দ্রে পর্যটক আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে লাউচাপড়া একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement