‘আমার মেয়েকে গরম পানি ঢাইলে পুইড়া দিছে’
- জামালপুর প্রতিনিধি
- ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:০০, আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৫১
জামালপুরে যৌতুক দিতে না পারায় নিশি আক্তার নামে এক গৃহবধূর গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই নারীর বড় বোন মৌসুমী আক্তার জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন। এর আগে সোমবার তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, আল-আমীন জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের মুল্লিকপুর গ্রামের আশেক আলীর ছেলে এবং নিশি আক্তার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের নাগেরপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আব্দুল মান্নানের মেয়ে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ‘১০ মাস আগে আল-আমীনের সাথে নিশি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ পাঁচ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র ও মোবাইলসহ স্বর্ণালংকার যৌতুক দেয়া হয়। গত তিন মাস ধরে শহরের গেইটপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকছেন তারা। কিন্তু প্রবাসীর টাকার লোভ কমেনি আল-আমীনের। আল-আমীন আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে শ্বশুর বাড়ির কাছে। পরে টাকা না পেয়ে মারধর ও নির্যাতন শুরু করে স্ত্রী নিশিরের উপর। পান থেকে চুন খসলেই শুরু হতো নির্যাতন।’
মামলা সূত্রে আরো জানা গেছে, ‘শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আল-আমীন তাকে (নিশি) মারধর করার একপর্যায়ে গায়ে পানি ঢেলে দেয়। এতে তার শরীর ঝলসে যায়। এ অবস্থায় নিশিকে চিকিৎসা না দিয়ে আল-আমিন স্ত্রীকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিশিকে রেখে পালিয়ে যান আল-আমীন।’
ভুক্তভোগী নিশি আক্তার বলেন, ‘প্রায় সময়ই তাকে মারধর করতেন আল-আমীন। রান্নায় লবণ কম হলে মারত তাকে। ঘটনার দিন ৫ লাখ টাকার জন্য চাপ দিলে দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমার গলা চেপে ধরে, মুখে গামছা ডুকিয়ে মারধর করে। পরে শরীরে গরম পানি ঢেলে দিয়ে ঘর তালা বদ্ধ করে রাখে।’
এ ঘটনায় নিশির মা নার্গিস আক্তার বলেন, ‘বিয়ে দেয়ার পর থেকে অনেক অত্যাচার করেছে। আমরা বিয়ে দিতে চাইনি জোর করে বিয়ে করে। অনেক যৌতুক দিছি। ফার্নিচার, গাড়ি, গয়নাসহ সব দিছি। আমার মেয়েকে গরম পানি ঢাইলে পুইড়া দিছে। তাও আমি জানতাম না। মেয়ে ফোন দিছে, ছবি দিছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো: মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘মেয়েটির শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে অনেক দেরিতে আসায় শরীরে আরো বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবু আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়েছি।’
জামালপুর থানার ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মেয়েটির বড় বোন থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় আল-আমীনসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান চলছে।’
ওসি আরো বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকা থেকে আল-আমীনের বাবা আশেক আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা