ভালুকার এসকিউ কারখানায় ফের ১২ শ্রমিক অসুস্থ, মৃত্যু ১

ময়মনসিংহের ভালুকায় এসকিউ গ্রুপের কারখানায় ফের ১২ শ্রমিক অসুস্থ ও শিউলী আক্তার (৩৬) নামে এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই কারখানাটিতে মোট ৪৪ জন অসুস্থ ও তিনজনের মৃত্যু হলো।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারী) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

শিউলী আক্তার নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার আলমুশরা রাজতলা গ্রামের বাসিন্দা।

ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) হাসানুল হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে এসকিউ গ্রুপের সেলসিয়াস ইউনিটের নিটিং সেকশনের অপারেটর শিউলী আক্তারসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। খোঁজ পেয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ অসুস্থ শিউলী আক্তারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। অন্য অসুস্থদের শ্রীপুরের মাওনা আল হেরা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে ওই হাসপাতালটি উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

নতুনভাবে অসুস্থ ১৩ জনের নাম জানা গেছে, তারা হলেন রোজিনা, মারুফা, সুমি আক্তার, শিখা, নিশাত, হাসিনা, অজুফা আক্তার, রহিমা আক্তার, শারমিন, জোসনা ও সুফিয়া।

উল্লেখ্য, এর আগে ওই কারখানায় গণ মনস্তাত্ত্বিক রোগে ৩৪ শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মাঝে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। শ্রমিক অসুস্থ ও মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, শিল্পপুলিশ ও সিভিল সার্জনের পক্ষে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলো ইতোমধ্যে তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে। সিভিল সার্জনের পক্ষে তদন্ত কমিটির প্রধান ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) মোহাম্মদ হাসানুল হোসাইন অসুস্থদের বিষয়ে তদন্ত করে গণ মনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্তের কথা উল্লেখ করে সিভিল সার্জনের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। ফের শ্রমিক অসুস্থ ও মারা যাওয়ার বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য মোবাইলে বার বার চেষ্টা করলে রিসিভ না করায় কারখানার কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুল হোসাইন জানান, মঙ্গলবার ওই কারখানায় ফের অসুস্থ হয়ে শ্রমিক মারা যাওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। পরে নিহতের পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া একটি প্রাইভেট হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে জানাতে পেরেছেন, নিহত নারী শ্রমিক থাইরয়েড, হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভূগছিলেন। ওই কারখানায় শ্রমিক অসুস্থতার বিষয়ে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে তিনি সিভিল সার্জন ও শিল্পপুলিশের এসপিকে নিহত মহিলার লাশটি ময়নাতদন্ত করার জন্য সুপারিশ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহম্মেদ জানান, এসকিউ কারখানায় ফের নতুন করে শ্রমিক অসুস্থ ও একজন মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পাঁচটি দফতরের কর্মকতাদের নিয়েওই কারখানা পরিদর্শণ করেন। আগের শ্রমিক নিহতের বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিরিকিনা ইউনিটটি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া সেলসিয়াস ইউনিটেরভবনটি দক্ষ জনবল দিয়ে অধিকতর পরীক্ষা নিরিক্ষার সিদ্ধান্তের কথা জানান।