কৈশোরের অবক্ষয় রোধে নৈতিক পরিবেশ ও ধর্মীয় শিক্ষায় জোর দিতে হবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
‘কিশোর অপরাধ : সামাজিক দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে এই সঙ্কট নিরসনের জন্য সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি নাগরিক উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সাথে কৈশোরের অবক্ষয় রোধের জন্য নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, প্রযুক্তির উন্নয়ন সমাজের জন্য সম্ভাবনা যেমন সৃষ্টি করেছে তেমনি নেতিবাচক নানা প্রভাবও তৈরি করছে।
‘জাকাত ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ গত শুক্রবার রাতে এই অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করে। শিক্ষানুরাগী ও শিল্পপতি আলহাজ বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিরুল ইসলাম। জাকাত ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার উইংয়ের ডিরেক্টর অধ্যাপক আয়েশা সিদ্দীকা নাঈমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট মাসুমুর রহমান খলিলী ও ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট নাঈমা জান্নাত। আলোচনায় আরো অংশ নেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সেলিনা ইয়াসমিন, অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আকন্দ, কমান্ডার (অব:) আলতাফ হোসেন, ড. নাজমা সুলতানা, এস এম আল আসীন ফয়েজী প্রমুখ। বিশিষ্টজনদের মধ্যে সেমিনারে অংশ নেন, বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রফেসর তাহেরা খাতুন, প্রফেসর ড. আহমেদ উল্লাহ, প্রফেসর ড.আবুল বাসার ভূঁইয়া (মালয়েশিয়া), ড. মুহাম্মদ নাজমুল হক (মালয়েশিয়া), ঈলিথা পারভীন (লন্ডন), ডা: মেহেদী (কুয়েত), নাসিরউল্লাহ ।
সেমিনারে বক্তারা, কিশোর অপরাধ কেন হচ্ছে? কিভাবে আমাদের প্রিয় সন্তানকে অপরাধ জগৎ থেকে নিরাপদে রাখব? কিশোর অপরাধীর সাথে আমার, আপনার কেমন আচরণ হবে? এসব বিষয়ের ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন।
কিশোর অপরাধের ওপর মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম কিশোররা কিভাবে নানান ধরনের অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে, কারা তাদের প্ররোচিত করছে, কিভাবে তাদের অপরাধ থেকে দূরে রাখা সম্ভব এবং এ ক্ষেত্রে মা-বাবা ও বিদ্যালয়ের ভূমিকা ও করণীয় কী তা বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ড. জামির বলেন, কিশোর অপরাধ নির্মূল করতে হলে তাদের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে তাদের বেড়ে উঠার পরিবেশের প্রতি দিতে হবে বিশেষ নজর।
সাইকোলজিস্ট নাঈমা জান্নাত শিশু কিশোরদের মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে তাদের যথোপযুক্ত পরিবেশ প্রদানের ওপর জোর দেন। তিনি কিশোর অপরাধে জড়ানোর পেছনে যেসব কারণ রয়েছে সেগুলো অপনোদন এবং তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পপতি আলহাজ বেলায়েত হোসেন শিশু-কিশোরদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের ভূমিকার ওপর বিশেষভাবে জোর দেন। তিনি বলেন, কিশোর অবক্ষয় ও অপরাধ যে সামাজিক সঙ্কট নিয়ে এসেছে তা থেকে উত্তরণের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সরকার বা প্রশাসন তার ভূমিকা রাখবে । একই সাথে এগিয়ে আসতে হবে নাগরিক সমাজকে। তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত কলেজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষকরা রুটিন শিক্ষকতার বাইরে নৈতিক মানুষ গড়ার জন্য ছাত্রদের কিছু বাড়তি সময় দিলে এতে দেশ ও জাতির অনেক উপকার হবে।
আলহাজ বেলায়েত তার বক্তব্যে শিক্ষক সমাজের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি শিক্ষকদের নিজ দায়িত্বের প্রতি আরো সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা