২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দরিদ্র জেলেদের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখার দাবি

-

বঙ্গোপসাগরের মৎস্য সম্পদ এবং প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসকারী বৃহৎ দূষণকারীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন অধিকারভিত্তিক নাগরিক সমাজ। তারা দরিদ্র জেলেদের ৬৫ দিনের জন্য আরোপিত মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখারও সুপারিশ করেন।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। কোস্ট ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ মৎস্য শ্রমিক জোট যৌথভাবে এ মানববন্ধন আয়োজন করে। কোস্ট ট্রাস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইক্যুইটিবিডির প্রধান সঞ্চালক এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মৎস্য শ্রমিক জোটের সচিবালয় সমন্বয়কারী মো: মজিবুল হক মনির। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কোস্ট ট্রাস্টের বরকত উল্লাহ মারুফ, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম এবং বাংলাদেশ কিষাণী সভার রেহেনা বেগম।
মো: মজিবুল হক মনির বলেন, উপকূলীয় এলাকার দরিদ্র জেলে যারা ছোট ছোট নৌকায় মাছ ধরেন, সাগর দূষণ এবং প্রাণবৈচিত্র্যের ক্ষতি করার ক্ষেত্রে তাদের অবদান খুবই নগণ্য। বরং এর জন্য দায়ী বরং বড় বড় দূষণকারী জাহাজ। সাগর দূষণকারী, ক্ষতিকর বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরে মৎস্য সম্পদ ও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসের জন্য মূল দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং দরিদ্র জেলেদের ৬৫ দিনের মাছ ধরার যে নিষেধাজ্ঞা তার বাইরে রাখতে হবে।
মানববন্ধন থেকে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দরিদ্র ও প্রান্তিক জেলে, যারা ছোট নৌকা দিয়ে উপকূলের কাছাকাছি মাছ আহরণ করেন, তাদের এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখতে হবে, বঙ্গোপসাগরে মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ, বাস্তুসংস্থান ও জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকি জাহাজশিল্প, বিদেশী জাহাজের দূষণ ইত্যাদির ওপর পরিবেশগত জরিপ (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) করতে হবে এবং তা প্রতিরোধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাসিক ভাতা হিসেবে ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা প্রতি জেলে পরিবারের জন্য বরাদ্দ করতে হবে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে এবং সাধারণ সময়ে বিদেশী জেলেদের বাংলাদেশ সমুদ্রসীমায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে, মাছ ধরার সব নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে ইত্যাদি।
মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, ৬৫ দিনের জন্য জেলে পরিবার প্রতি মাত্র ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। প্রতিটি পরিবারের জন্য মাসিক ৮ হাজার টাকা ভাতা দেয়া প্রয়োজন। ভারতের উড়িশ্যা ও তামিলনাড়ুতে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময় প্রায় ৬ হাজার রুপি করে জেলেদের দেয়া হয় এবং দরিদ্র জেলেদের নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়।
রেহেনা আক্তার বলেন, দরিদ্র জেলেসহ সব জেলেকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে, যাতে করে তারা সরকারি সুযোগ সুবিধা সহজে পেতে পারেন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বঙ্গোপসাগরের প্রাণবৈচিত্র্যের ক্ষতির জন্য দরিদ্র জেলেরা মাত্র ৪% দায়ী, অথচ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ফলে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।


আরো সংবাদ



premium cement