হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারতের সাথে সম্পর্ক থেমে থাকবে না : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২৬
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারতের সাথে সম্পর্ক থেমে থাকবে না বলে ইঙ্গিত দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ভারতের সাথে যে টানাপড়েন চলছিল সেটা সবাই জানে। আমরা স্বীকারও করেছিলাম। এখন দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য মোটামুটি স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটা ভালো লক্ষণ। কিন্তু ভিসাসহ কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। আমরা দুই পক্ষই এ ব্যাপারে একমত হয়েছি যে, বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করে একটা ভালো কার্যকর সম্পর্কে পৌঁছাতে হবে।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ওমানে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক করেছেন।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুকে সরিয়ে রেখে ভারতের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা সরিয়ে রাখার ব্যাপার না। বাংলাদেশের আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাকে ফেরত দেয়ার জন্য আমরা ভারতকে অনুরোধ করেছি। তার মানে এই নয় যে আমরা বাকি সব কিছু নিয়ে বসে থাকব।
তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি জয়শঙ্করকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বলেছি, আমাদের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেরও দুই দেশের একটা মেকানিজম আছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতবার আপনাদের দেশে গেছেন, এখন আপনার ঢাকায় আসার পালা। আপনি সময় জানালে আমরা ব্যবস্থা করব।
আমন্ত্রণের বিষয়ে জয়শঙ্কর কী বলেছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, তিনি ইতিবাচক।
দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে জয়শঙ্করের সাথে আলাপ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা নির্দিষ্ট কোনো উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা স্বীকার করেছি, কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে। এগুলো আমাদের দূর করতে হবে। এখন দুইপক্ষ একমত যে এগুলো দূর করতে হবে, সম্পর্কটা যতটা সম্ভব উন্নত হয় সেটা দেখতে হবে।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাথে আলাপ হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ওটা নিয়ে নির্দিষ্ট করে আলোচনা হয়নি। আমরা সার্বিকভাবে অনেক ইস্যুতে কথা বলেছি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার বা ৩৫৩ কোটি টাকার বরাদ্দ বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকারি অর্থের অপচয়রোধ এবং ফেডারেল অর্থের কৃচ্ছ্রতাসাধনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশে গঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট ইফিসিয়েন্সির (ডোজ) নির্দেশে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বরাদ্দ বাতিলের তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মালদোভাসহ আরো কয়েকটি দেশ রয়েছে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল বাংলাদেশের জন্য অর্থায়ন বন্ধ করেনি। অন্যান্য দেশের সাথে তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। এটা নিয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা বিকল্প কি উপায়ে সংগ্রাম করতে পারি, সেটা দেখতে হবে।