বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তের দায়িত্ব থেকে দুদক পরিচালককে প্রত্যাহার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:৩৩
সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তদন্তকাজ থেকে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
একইসাথে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও লকার নিয়ে নিয়মিত লেখার কারণে কমিশন থেকে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির কারণে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের লকারে অভিযান চালানো দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাজী সায়েমুজ্জামানের বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থী। গত সপ্তাহে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে এ চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের পরিচালক।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযান চালায় দুদক। বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার নামে কোনো লকার খুঁজে পায়নি তারা।
অভিযান শেষে এ তথ্য জানান অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কাজী সায়েমুজ্জামান। তিনি বলেন, ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান যে ২৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের জন্য এসেছিলাম, তাদের নামে কোনো লকার পাওয়া যায়নি। তবে আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে পরে অভিযান চালাবে দুদক।
বিদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, রিজার্ভের অর্থ তছরুপ ও সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক-বর্তমান ২৫ কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে দুদক।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকে এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত, অনেকে এখন চাকরিতে নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখন পর্যন্ত মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থসম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দেয় দুদক। গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে গঠিত দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে তার জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, এক লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। যা তার নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা