২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৫ রজব ১৪৪৬
`

হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল মানুষের জীবন

-

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শীতের তীব্রতা কমেনি, নীলফামারীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। এসব জায়গায় হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন যাত্রা।
তেঁতুলিয় (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পাঁচদিন পর সূর্য দেখা গেলেও কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা কমেনি। গতকাল শনিবার সকালে তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগার সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনাজপুরে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। সকালে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও রৌদের প্রখরতা ছিল না। এদিকে শীত ঋতুর মাঘ মাসে সপ্তাহজুড়ে কয়েক দফা মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এ ছাড়া গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ন্যায় কুয়াশা ঝরেছে। ফলে উত্তরের হিমেল বাতাস ও কনকনে শীতে সাধারণ মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। অপর দিকে শুক্রবার বিকেলে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা, সিপাইপাড়া, তিরননই হাট, খয়খাটপাড়া ও শালবাহান এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঘন কুয়াশা কেটে গেলেও কনকনে শীতের প্রকৌপ আরেক দফা বেড়েছে। শীতের কারণে খেটে খাওয়া চা বাগান ও পাথর কুয়ারির সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশু কিশোর ও বৃদ্ধরা সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়লেও এখনো সরকারিভাবে গরিব দুঃখী মানুষের মাঝে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি। ফলে শীত নিবারণে গরিব-দুঃখী মানুষকে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনাজপুরে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৫ দিন পরে আজ সূর্যের মুখ দেখা গেলেও কুয়াশা থাকায় সূর্যের আলো মাটিতে না পৌঁছায় শীতের প্রকোপ কমেনি।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। ভোর রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে এ অবস্থা। সেই সাথে হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে নীলফামারীর জনজীবন। এদিকে গত ৪ দিন ধরে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডার সাথে শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এ অবস্থায় দরিদ্র, ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছে চরম দুর্ভোগে। স্বাভাবিক কাজকর্মে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তীব্র শীতের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকে দিনভর খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বেড়াকুটি গ্রামের কৃষি শ্রমিক আবদুল হাকিম জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সামান্য দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। ভোর রাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। কাজে গেলে শরীর ভিজে যাচ্ছে কুয়াশায়। তাই দু’দিন ধরে কাজে যেতে পারিনি।
হাড় কাঁপানো শীত আর হিমেল বাতাসে মানুষজনের পাশাপাশি জবুথুব হয়ে পড়েছে গবাদি পশু। চট গায়ে দিয়ে দিনভর তাদের রাখা হচ্ছে ঘরে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার সকালে বিমানবন্দর এলাকায় দৃষ্টিসীমা ছিল ১০০ মিটার। এ কারণে সকাল ৮টার ২টি ফ্লাইটের ওঠা-নামা বিঘœ ঘটে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, সকালে নীলফামারীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ০ ডিগ্রি।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে তীব্র শীত অনুভূত না হলেও কয়েক দিন থেকে বেড়েছে কুয়াশার দাপট। গত দুই দিন থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। রোদহীন দিনভর কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল হাওয়ায় আবারো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কমলগঞ্জে জনজীবন। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মজিবুর রহমান জানান, শ্রীমঙ্গলের গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিলন ২১.৫ ও ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন ধরেই কুয়াশার আড়ালে ঢাকা পড়ে রয়েছে সূর্য। সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশার দাপট কিছুটা কমলেও সূর্যের দেখা মিলছে না। দিনের বেলার গাড়ির হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। এ ছাড়া রাতে এবং সকালে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। সাথে হিমেল বাতাস শীতের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমন আবহাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষরা। এদিকে শীতের মধ্যে জীবিকার তাগিদে দিনমজুররা কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হলেও তাদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। তীব্র শীতের কারণে টিকমতো কাজ করতে পারছেন না। নিম্ন আয়ের মানুষরা বলেন, কুয়াশার কারণে দেখা যাচ্ছে না সূর্য। কাজ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে কাজ করতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। এদিকে কৃষক বলেন, হঠাৎ করে প্রচুর ঠাণ্ডা পড়েছে। সূর্যের দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না। এখন ধান রোপণের সময়। জমির পানিতে নামলে মনে হচ্ছে বরফ হয়ে আছে পানি। এজন্য ঠিকমতো ধান রোপণ করতে পারছি না।


আরো সংবাদ



premium cement
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ডিএমপির নির্দেশনা বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত রাজবাড়ীতে হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৬ বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে ভারত-চীনকে বাঁধ নির্মাণের আহ্বান গোঁজামিলের ভোটার তালিকা মেনে নেয়া হবে না : মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ইইউ বাংলাদেশের সাথে বিস্তৃত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের পক্ষে ‘হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত কোনো আপস হবে না’ রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহবান মন্ত্রণালয়ের ঈশ্বরগঞ্জে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু বাউফলে ছুরিকাঘাতে অটোচালক নিহত যে কারণে নববর্ষের ২৭ দিন পর ড. ইউনূসকে নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা

সকল