একদেশ নির্ভরতা কাটাতে পুবের দিকে তাকাতে হবে
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৮
সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজের (সিএসপিএস) উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বলা হয়েছে একদেশ নির্ভরতা কাটাতে বাংলাদেশকে পুবের দিকে তাকাতে হবে। গত শুক্রবার রাজধানীতে সিএসপিএসের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সিএসপিএসের নির্বাহী পরিচালক ড. মো: মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ, মো: জাকির হোসেন খাঁন। বৈঠকে প্যানেল আলোচক ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মো: আবদুল লতিফ মাসুম ও নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী। গোলটেবিল বৈঠকে দেশের অবসর প্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, পুলিশ ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, শিক্ষাবিদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভার আলোচনায় আরো অংশ নেন, প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব:) রোকন উদ্দিন, কর্নেল (অব:) আশরাফ আল দীন, মেজর (অব:) ড. মো: ইউনুস আলী, সাবেক এআইজিপি মো: মুনির হোসাইন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আবুল হোসাইন, নুরুল আলম, ড. ফজলে রাব্বি সাদেক, কৃষিবিদ ড. আবদুল মান্নান, ড. মো: মিজানুর রহমান প্রমুখ।
সভায় বক্তরা বলেন, বাংলাদেশের ‘পুবে তাকাও’ নীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সমন্বয়ের এমন এক উদ্যোগ যা একদেশ নির্ভরতার অবসান ঘটাতে পারে। গত শতাব্দীর শেষ দশকে এ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হলেও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ভারতের সাথে একমুখী পররাষ্ট্র নীতির কারণে বৈদেশিক সম্পর্ক বিস্তারের পূর্বের দিকে তাকানোর নীতি চাপা পড়ে যায়।
বক্তরা আরো বলেন, বাংলাদেশের বিগত সরকারের ভারতনির্ভর পররাষ্ট্রনীতির কারণে পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশ এবং জোটের সাথে জোরদার সম্পর্ক গড়ে উঠেনি। এমনকি ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের সাথে মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য মুসলিম দেশেরও কার্যকর সম্পর্ক গড়ে উঠেনি। জাপান, কোরিয়ার মতো অনেক উন্নত অর্থনীতির দেশের সাথেও তেমন কার্যকরী প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেনি। আশির দশকে সার্ক প্রতিষ্ঠা হলেও ১.৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশগুলোর বাজারের আন্তঃবাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ ভারতের দাদাগিরির কারণেই সার্ক অকার্যকর হয়ে পড়ে।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতিতে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি এবং পররাষ্ট্র কৌশল এমনভাবে গ্রহণ করা দরকার যাতে পূর্ব এশিয়ার ২৭টি দেশ নিয়ে শক্তিশালী আসিয়ান জোটের সাথে আমরা কৌশলগতভাবে সম্পৃক্ত হতে পারি।
সভায় বলা হয়, ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালে আসিয়ানের আসন্ন সভাপতি পদে মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে সবার সমর্থন চাই। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকার অপেক্ষায় আছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিএসপিএসের গোলটেবিল বৈঠকে সব আলোচক প্রফেসর ডক্টর ইউনূসের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং আসিয়ানে যোগ দেয়াসহ বিশ্ব জোড়া তার নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নে সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা