সাংবাদিক তুরাব হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে : আইজিপি
- সিলেট ব্যুরো
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক তুরাবকে আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো না, কিন্তু সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তিনি তুরাব হত্যায় দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়ে বলেন, এ মামলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। বর্তমান এসএমপি কমিশনারের প্রতি সেই নির্দেশনা দেয়া আছে।
আইজিপি গতকাল দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) সদর দফতরে বিভাগের সব ইউনিট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এসএমপি কমিশনার মো: রেজাউল করিম।
আইজিপি বলেন, এখনো সারা দেশে আমরা প্রায় দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার করতে পারিনি। এখন মাটি খুঁড়ে অস্ত্র বের করা আমার জন্য কঠিন। তবে আমি যদি সমাজের লোকের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পারি তাহলে সাধারণ মানুষ বলে দেবে ওই জায়গায় অস্ত্র পড়ে আছে। এটাই সবচেয়ে সহজ আমাদের জন্য। সাধারণ মানুষ সবকিছু দেখে। কিন্তু তারা যে থানায় এসে বলবে ওইখানে অস্ত্র দেখেছে, সেই আত্মবিশ্বাস এখনো তৈরি করতে পারিনি। আমি চাই আমার যারা সহকর্মী আছেন, তারা যেন মানুষের কাছে যেয়ে আস্থা অর্জন করবেন। ট্র্যাডিশনাল যে পন্থা সেটায় আমরা অস্ত্র উদ্ধার করব। কিন্তু এই অস্ত্র উদ্ধার ফলপ্রসূ হবে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করলে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পুলিশের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। পটপরিবর্তনের সময় কোনো সিনিয়র পুলিশ অফিসার মারা যাননি। যারা মারা গেছেন, তারা সবাই ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মানতে গিয়ে তারা জনরোষে পড়েছেন। সুতরাং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের চাঙা করাই আমাদের মূল কাজ।
আইজিপি আরো বলেন, বিগত সময়ে পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এ জন্য আমরা লজ্জিত। পুলিশকে রাজনৈতিক কুপ্রভাবমুক্ত করতে হবে। তাই পুলিশকে রিফর্ম করার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশে মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। অনেকে বাণিজ্য করছেন। এদের মধ্যে আবার কেউ সমাজের বড় নেতাও। তবে আমরা কথা দিচ্ছি- নিরীহ যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে না। বরং নির্দেশ দেয়া হচ্ছে- তাদের খোঁজে বের করে তদন্তকারী কর্মকর্তা যেন অভয় দেন, আশ্বস্ত করেন।
৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আইজিপি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চাইলে কেউ দিবেন না, ভয়ও পাবেন না। আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে আছি।
আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের মারধরের বিষয়ে আইজিপি বলেন, এই বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। বিজ্ঞ আদালত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করবেন।
পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কমিশনে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় সুপারিশ করেছি। বিশেষ করে বেশির ভাগ পুলিশ সদস্যকে ওভারটাইম কাজ করতে হচ্ছে। এটার জন্য তারা কোনো ভাতা পান না। এ বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে, তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজকে আমরা সবাইকে নিয়ে তাদের কথা শুনবো। এ জন্যই মূলত আমার সিলেট সফর।
মতবিনিময় সভায় র্যাবের অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো: মুশফেকুর রহমানসহ পুলিশের সব দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা