সংস্কার চলছে, আমাদের ব্যক্তিগত কোনো এজেন্ডা নেই
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যুগের সাথে তাল মেলাতে না পারলে মধ্য আয়ের দেশে যাওয়া অর্থবহ হবে না বলে মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও রফতানি বাড়াতে কাজ করছি। বর্তমানে আর্থিক খাতে সংস্কার হচ্ছে। কিছু সংস্কার অর্জিত হয়েছে। আমাদের ব্যক্তিগত কোনো এজেন্ডা নেই। আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু জমি ও সম্পদ কম। এর মধ্যেও এলডিসি উত্তরণ একটি বড় ঘটনা। এলডিসি উত্তরণে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকলেও প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। এলডিসি উত্তরণে জনগণের জন্য শোভন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সামাজিক বৈষম্য দূর করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এগুলোর দিকে নজর দেয়া না হলে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা আছে।
গতকাল রোববার সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের ‘বাংলাদেশ স্মুথ গ্র্যাজুয়েশন স্ট্রাটেজি’-এর খসড়া নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিটেন্টালে এ কর্মশালার আয়োজন করে যৌথভাবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও ইএনডিপি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রফতানির ক্ষেত্রে আমরা যে জিএসপি সুবিধা পাচ্ছি, এলডিসি উত্তরণের পর সেটি থাকবে না। আমাদের পোশাক ও ওষুধসহ বিভিন্ন শিল্পে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু সেজন্য আমাদের পিছিয়ে থাকলে হবে না। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা নেয়াসহ অন্য বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চলছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবন্ধ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে দেয়া হবে। বর্তমানে আর্থিক খাতে সংস্কার হচ্ছে। কিছু সংস্কার অর্জিত হয়েছে। কিছু চ্যালেঞ্জ সামনে আছে। আমরা আশা করছি, সেগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এখন আমরা যেসব সংস্কার করছি সেগুলো পরবর্তী সরকারের জন্য ইতিবাচক পদচিহ্ন হয়ে থাকবে। এছাড়া আমরা বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও রফতানি বাড়াতে কাজ করছি। আমাদের ব্যক্তিগত কোনো এজেন্ডা নেই।
ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূল সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, ইউএনডিপির আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস ও ইউএন কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য ট্যাফিয়ার টেসফিসিউ। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইআরডির এইড ইফেকটিভনেস ইউনিটের উইং চিফ এএইচএম জাকারিয়া কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. এম এ রাজ্জাক।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইউএনডেসা বাংলাদেশকে সঠিকভাবেই মূল্যায়ন করছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে। এরপর যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবেলার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার। এক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ, উৎপাদিত পণ্যের মান বাড়ানো, রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কমানো এবং শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া জরুরি। সেই সাথে বিভিন্ন দেশের সাথে এফটিএ (ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট) সম্পন্ন করা দরকার। পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো, দেশে ব্যবসার খরচ কমানো এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে হবে। এগুলোর দিকে নজর দেয়া না হলে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা আছে।
বক্তারা আরো বলেন, দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে বৈষম্য কমাতে হবে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে যে পরিবর্তন এসেছে তার মূল কথাই ছিল বৈষম্য দূর করা। সেই চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এলডিসি উত্তরণ শুধু যে চ্যালেঞ্জর তা নয়, পাশাপাশি সম্ভাবনাও তৈরি করবে। কিন্তু আমাদের কাজ হবে সেই সম্ভাবনাগুলেকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া। এই কৌশল কার্যকর করতে যথাযথ উদ্যোগ থাকতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা