এস আলম-বেক্সিমকো কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেবো না : গভর্নর
শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে : ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যান- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এস আলমথ বা বেক্সিমকো যেই হোক, প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় সম্পদ। এখানে প্রকৃত মালিক থাকুক বা না থাকুক প্রতিষ্ঠানগুলো চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষ কর্মরত। উৎপাদনের সঙ্গে তাদের যেমন সম্পর্ক আছে, ব্যাংকেরথ সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে। তাই এগুলো বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ দিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেছেন, এস আলমের শেয়ার বিক্রির জন্য শিগগিরই আদালতে মামলা করা হবে। এর পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে এস আলমের মালিকানায় থাকা শেয়ার বিক্রি করা হবে। এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে।
গভর্নর বলেন, সবার আমানতের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। আমাদের প্রধান লক্ষ্য সবার আমানত ফেরত দেয়া। এ জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করা হবে। তবে সেটা বাচ্চা নয়, ললিপপ চাইল, আর দিয়ে দিলাম। এ রকম হবে না। সব হিসাব-নিকাশ করে টাকা দেয়া হবে। এস আলম-বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক কর্মী কর্মরত আছেন। উৎপাদনের সাথে তাদের সম্পর্ক আছে, তাদের সাথে ব্যাংকেরও সম্পর্ক রয়েছে। এগুলো তো বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। কাজেই, আমাদেরকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান কিন্তু আলাদা। যাতে ফান্ড ডাইভারশন না হয়। আমাদের সেই প্রচেষ্টা থাকবে। কোনো প্রতিষ্ঠানকে আমরা মরতে দেবো না। প্রতিষ্ঠান মারা খুব সহজ, কিন্তু গড়ে তোলা অনেক কঠিন। অনেক সময়ের ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দেশ উপকৃত হয়, জাতি উপকৃত হয়।
গভর্নর বলেন, তাড়াহুড়া বা আবেগ অল্প সময়ের জন্য মানুষকে উত্তেজিত করে। কিন্তু আবেগ দিয়ে দেশ চালালে সেটা ভালো হয় না। আমাকে বাস্তববাদী হতে হবে। পাশাপাশি সঠিক নীতি তৈরি ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে। আগের বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ফিরে এলে ইসলামী ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বিনিয়োগ ও আমানতের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবধান রয়েছে। এস আলম গ্রুপের শেয়ার বিক্রি এবং নতুন শেয়ার ইস্যু করে এই ঘাটতি কমানো হবে। এস আলম গ্রুপের কাছে থাকা শেয়ারের ফেস ভ্যালু (অভিহিত মূল্য) ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬০ টাকা হিসাবে এসব শেয়ারের বর্তমান মোট বাজারমূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা নতুন শেয়ার ইস্যু করে সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা আইএফসি ও সৌদি আরবের বিনিয়োগকারী আল রাজি গ্রুপের মতো পুরনো বিদেশী শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। জানুয়ারি মাসের মধ্যে তাদেরকে আবার বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
তিনি আরো বলেন, গত তিন মাসে আমাদের ব্যাংকের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণাত্মক কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এখন দুই হাজার কোটি টাকাতে নেমে এসেছে। ধীরে ধীরে এটা আরো কমবে। গত তিন মাসে আমরা ৪ হাজার ৯৭২ কোটি টাকার নতুন আমানত সংগ্রহ করতে পেরেছি। পাশাপাশি নতুন ঋণ বিতরণ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন করে ২ হাজার ৭০০ এজেন্ট পয়েন্টে তিনজন করে ব্যাংকের কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের আমানতের পরিমাণ অনেক বাড়বে আশা করি। লুটপাট হওয়া টাকা আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে চারটা আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা নিয়োগ করেছি। তাদের কাজ হলো সার্বিক বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। তদন্ত শেষ হলে মূলত আমরা অ্যাকশনে যাব। ক্ষতি নিরূপণসহ ব্যাংকের টাকা আদায় প্রক্রিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা