২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

৪৮০টি বিড়াল ও ১২টি কুকুরের আশ্রয়দাতা

৪৮০টি বিড়াল ও ১২টি কুকুরকে বাসায় আশ্রয় দিয়েছেন বালুশি - ছবি : এএফপি

ওমানের রাজধানী মাসকটে মরিয়ম আল বালুশির বাসায় ঢুকতেই তার বিছানাজুড়ে এক ডজনেরও বেশি বিড়াল ও কুকুর চোখে পড়ে।

প্রতিবেশীদের অভিযোগ ও অতিরিক্ত ব্যয় সত্ত্বেও তিনি ৪৮০টি বিড়াল ও ১২টি কুকুরকে তার বাসায় আশ্রয় দিয়েছেন। তার মতে পোষা প্রাণীগুলো সঙ্গী হিসেবে মানুষ অপেক্ষা ভালো ও তাকে আনন্দিত করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি প্রাণীরা বিশেষত বিড়াল ও কুকুর মানুষের চেয়ে বেশি বিশ্বস্ত’। বালুশি অল্প বয়সে এতিম হন। তিনি গত এক দশক ধরে তার নিজের তৈরি প্রাণীশালায় অভুক্ত থাকা অনেক প্রাণীদের এনে বড় করছেন যার মধ্যে অনেকগুলোকে তিনি রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছেন।

ওমানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপদগ্রস্ত এবং পরিত্যক্ত প্রাণীর সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওমানে একটি করে পোষা প্রাণী ফেলে দেয়ার জন্য ২৫ ডলার জরিমানার আইন সত্ত্বেও সংখ্যাটি বেড়ে চলেছে। বন্যপ্রাণীদের কল্যাণে কাজ করা কর্মীরা সংখ্যাটি কমিয়ে আনতে ‘ট্র্যাপ, নিউটার, রিলিজ’ নামে কর্মসূচি চালুর পদক্ষেপ নিয়েছে।

বালুশি প্রতিমাসে ওই প্রাণীগুলোর যত্নের পিছনে সাত হাজার ৮০০ ডলার ব্যয় করেন। যেগুলোর মধ্যে ১৭টি অন্ধ। তিনি সেগুলোকে যত্ন সহকারে খাওয়ানো ও পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তার বাড়ি এখন খাঁচায় পরিপূর্ণ। বালুশি প্রাণীগুলোকে রুটিন অনুসারে অনুশীলন ও খেলার জন্য ছাড়েন।

স্নিগ্ধ গোলাপী রঙের আবায়া পরিহিত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ৫১ বছর বয়সী বালুশি বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার ছেলে যখন একটি ছোট পার্সিয়ান বিড়াল কিনেছিল তখন থেকে আমার পশু পালন শুরু হয়।’ তিনি জানান, ‘বাকি সব মায়ের মতো আমিও বিড়ালটি রাখতে চাইনি। কেননা আমি প্রাণী পছন্দ করতাম না। আর আমার ছেলে ওটির পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে যত্নশীল ছিল না।’

কিন্তু দু’বছর পরে বালুশি আরো একটি বিড়াল পালন করতে শুরু করলেন এবং দেখলেন প্রাণীদের প্রতি তার ধারণা পাল্টেছে। ‘আমি পুরোপুরি ওদের প্রতি নিমগ্ন হয়ে গেলাম। ওদের যত্ন নেয়া, খাওয়ানো, গোসল করা থেকে শুরু করে ওদের সাথে অনেক সময় ব্যয় করি,’ জানান তিনি।

প্রাণীদের প্রতি বালুশির ভালোবাসার বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে তার বাড়ির দরজায় পোষা প্রাণী ছেড়ে যেতেন।

২০১৪ সালে নিজের বাড়ি কেনার পর তার প্রাণী সংগ্রহ বাড়তে থাকে। তারপর থেকে তিনি আরো বেশি প্রাণীর যত্ন নিতে সমর্থ হন।

তিনি বলেন, ‘তার বিড়াল ও কুকুরের এ দারুণ সংগ্রহশালা তার হতাশা দূর করতে সহায়তা করেছে। পাশাপাশি তার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার্স সংখ্যা বেড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি একটি অন্ধকার জগতে ছিলাম যেখান থেকে ওরা আমার উদ্ধারের উপায় হয়েছে।’

সূত্র : গালফ নিউজ/এএফপি


আরো সংবাদ



premium cement