পহেলা বৈশাখে নীরব রমনা
- শাহেদ মতিউর রহমান
- ১৪ এপ্রিল ২০২০, ১২:১৫
জনশূন্য রমনা পার্ক। সুনসান নীরবতা। একেবারেই যেন অচেনা। কোনো কোলাহল নেই। সামনের রাস্তাও ফাঁকা। গেটে ঝুলছে সাদা কাগজ। বন্ধের নোটিশ এটি। সবার জন্য সতর্ক বার্তা।
করোনার কারণে আতঙ্কে দেশবাসী। তাই বর্ষবরণের প্রস্তুতিও নেই। হাজার ছাড়িয়ে লাখো মানুষের আয়োজনও এবছর নেই। ঐতিহ্যবাহী রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানস্থলে নেই কোনো লোকজন। দু’জন নিরাপত্তা কর্মী হাতে লাঠি আর মুখে বাঁশি নিয়ে পায়চারী করছেন। দূরে পার্কের পানির লাইনে কাজ করছেন একজন। ক্যালেন্ডারের পাতা না উল্টালে কেউ টেরই পাবেন না আজ পহেলা বৈশাখ।
শাহবাগ শিশুপার্কের পাশে রমনা উদ্যানে তালাবদ্ধ প্রবেশ গেটে ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে রমনা পার্কে প্রবেশ নিষেধ, আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ’ সাদা কাগজে কালো রঙয়ে বড় বড় অক্ষরে লেমিনেটিং করা একটি সাইনবোর্ড। এই একটি সতর্কবার্তাই মানুষজনকে রমনা থেকে দূরে রাখছে।
এ বছর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারিভাবে জনসমাগম ঘটিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার সকল ধরনের অনুষ্ঠান পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নববর্ষ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনা পরিস্থিতির কারণে সবাইকে ঘরেই নববর্ষ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নববর্ষ পালনে এবছর কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। যুগ যুগ ধরে বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রভাতেই রমনার বটমূলে প্রভাতী আয়োজন ‘ছায়ানট’ এর সরোদবাদন দিয়ে বর্ষবরণ করে নিতে কেউ আসেনি। রমনা বটমূলের চৌহদ্দিজুড়ে সুনসান নীরবতা। জনশূন্য এ রমনা বটমূল একেবারেই অচেনা। বিবর্ণ নববর্ষের এমন সকাল রমনায় দেখে বুকের ভেতর কেমন যেন মোচর দিয়ে উঠছে।
যদিও অন্যান্য বছর পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে এই রমনায়। সব বয়সের লোকজন নতুন রঙিন পোশাক পরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষকে বরণ নেয়ার শুভ সূচনা করতেন তারা। উপস্থিত সকলের মুখে উচ্চারিত হতো ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’।
এ বছর ডিজিটালি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে ‘উৎসব নয়, সময় এখন দুর্যোগ প্রতিরোধের’- এ প্রতিপাদ্যে এ বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়েছে। ফলে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে না। শাহবাগ থেকে পল্টন মোড়, শেরাটন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বাংলা একাডেমি ও কার্জন হল পর্যন্ত বৈশাখের মেলা বসবে না। থাকবে না পান্তা ইলিশের আয়োজন। শিশুদের কাঁধে নিয়ে বাবা-মায়েদের ঘুরে বেড়াতেও দেখা যাবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা