কৃষিতে ড্রোন ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪০
‘সারাবিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় শিল্পের অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারি পর্যায়ে নীতিনির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলছে। আধুনিক সেচব্যবস্থার পাশাপাশি কৃষিতে ড্রোন ও স্যাটেলাইটভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিএএমবিই-২০২৫)’- শীর্ষক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘যেকোনো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য সরকার ও নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকে কিছু নির্দেশনা থাকে। আমি আশা করছি এই সম্মেলন কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রে বিস্ময়কর কিছু ধারণা নিয়ে আসবে। বর্তমানে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি, যা যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে।’
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই) এবং বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া ও বাকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া মেলার উদ্বোধন করেন।
মেলায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-সহ ৮টি কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান তাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। এ সময় মেলায় কৃষকদের উদ্দেশে নতুন কৃষি যন্ত্রপাতির লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, ফসল সংরক্ষণের উদ্ভাবনী পদ্ধতি, বায়োগ্যাস ও সৌরশক্তিচালিত যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী করা হয়। এছাড়া কৃষি যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিশেষ ঋণ সহায়তার বিষয়ে পরামর্শও দেয়া হয়।
মেলার উদ্বোধনী পর্ব শেষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ‘কৃষি গবেষণা, যান্ত্রিকীকরণ এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষতা’ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রফেসর মো: আবদুল আওয়ালের সভাপতিত্বে মেলায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। অতিথি ছিলেন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুন নাহার করিম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মো: আবদুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ এবং এসিআই মোটরস লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস।
এ সময় ভিসি প্রফেসর ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘কৃষির সকল পর্যায়ে যান্ত্রিকীকরণ এখন আবশ্যক। তবে আন্তর্জাতিকভাবে বিদ্যমান যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল না থেকে আমাদের দেশের চাহিদা অনুযায়ী যন্ত্র নকশা করতে হবে। কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে যন্ত্র তৈরি করতে হবে, যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।’