০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`
কর্মশালায় সাংবাদিক ও বক্তারা

মানুষের জীবন ধ্বংস করাই তামাক কোম্পানির ব্যবসা

কর্মশালায় অংশ নেয়া সাংবাদিকদের ফটোসেশন। - ছবি : নয়া দিগন্ত।

মানুষের জীবন ধ্বংস করাই তামাক কোম্পানিগুলোর ব্যবসা। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। এই ব্যাপক মৃত্যুর দায়ভার তামাক কোম্পানি কখনই স্বীকার করেনা। তামাকজনিত মৃত্যু আড়াল করতে এবং ব্যবসা বাড়াতে নানাধরনের কূট-কৌশল অবলম্বন করে তারা। তামাক কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য উন্মোচন করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রাজস্ব প্রদানের নামে যে তথ্য তারা প্রকাশ করছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট বলে মন্তব্য করছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, রাজস্ব যা দিচ্ছে তার সিংহভাগই ভোক্তার ভ্যাটের অর্থ। তাদের কোনো অবদান নেই।

রাজধানীর বিএমএ ভবনে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত “তামাক কোম্পানির কূট-কৌশল : গণমাধ্যমের করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন আলোচকবৃন্দ।

গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত দু’টি কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত মোট ৫১ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালাগুলোতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিআইসি-এর সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউন এর নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আকতার মালা, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, মো. হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ।

কর্মশালায় জানানো হয়, সম্প্রতি আইন সংশোধনকে বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানিগুলো অর্থ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরারর চিঠি দিয়েছে। আইন সংশোধন হলে সরকারের রাজস্ব হারানোসহ বেশকিছু ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছে কোম্পানি দু’টি। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হওয়ার পর পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৭.৯৭ শতাংশ এবং ৩৭.৫২ শতাংশ। একইভাবে, ২০১৩ সালে সংশোধনীর পর পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫.৫১ শতাংশ এবং ৪৬.৫২ শতাংশ।

কর্মশালায় জানানো হয়, আইন সংশোধনের সাথে খুচরা বিক্রেতাদের কর্মসংস্থান হারানোর তেমন কোনো সম্পর্ক নাই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় জরিপ প্রতিবেদন ২০২১ অনুযায়ী, দেশে সবধরনের খুচরা ব্যবসায়ে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩৯ হাজার। তবে খাদ্য, পানীয় এবং তামাকপণ্য বিক্রি করে এরকম খুচরা দোকানের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১, যারা অন্যান্য পণ্যের সাথেই তামাকপণ্য বিক্রি করে থাকে।

কর্মশালায় জানানো হয়, ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য ২০২১ সালে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যেগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আইন প্রণয়নে তামাক কোম্পানি ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো গোষ্ঠির পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লংঘন। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে ২০০৩ সালে এফসিটিসি-তে স্বাক্ষর করে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৫ বছর তদূর্দ্ধ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।


আরো সংবাদ



premium cement
ক্রেন দিয়ে ভাঙা হচ্ছে শেখ মুজিবের বাড়ি সড়ক দুর্ঘটনায় দাদি নিহত, আহত নাতি খুনের বিচার না হলে খুনের সংস্কৃতি চলতেই থাকবে : জামায়াত আমির ইজতেমায় হাজারো লোকের ফ্রি চিকিৎসা দিলো হাফেজ্জী চ্যারিটেবল রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের ফ্যাসিবাদের সব চিহ্ন মুছে দিলো শিক্ষার্থীরা ভোটার নিবন্ধনে অস্ট্রেলিয়া-কানাডায় যাচ্ছে ইসি পাবিপ্রবিতে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভেঙ্গে দিলেন শিক্ষার্থীরা রাবিতে মুজিব পরিবারের নামফলক ভেঙে ফেললেন শিক্ষার্থীরা সিলেটে শেখ মুজিবের ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলো ছাত্র-জনতা হানিফের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলো ছাত্র-জনতা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো খুলনার শেখ বাড়ি

সকল