০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১, ৩ শাবান ১৪৪৬
`

সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে যে আহ্বান হিউমান রাইটস ওয়াচের

সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে যে আহ্বান হিউমান রাইটস ওয়াচের - ছবি : সংগৃহীত

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সিভিল সার্ভিস, পুলিশ বাহিনী ও বিচার বিভাগের মতো সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, ‘বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগসহ সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে দায়িত্ব পালনকালে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়।’

‘আফটার দ্য মনসুন রেভোলিউশন : এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সম্প্রতি প্রকাশিত এইচআরডব্লিউর ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার একটি বড় কারণ রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ। ‘সংস্কার’ শব্দটি যতই সংবেদনশীল বা বিতর্কিত হোক না কেন, আমাদের কাছে এর কোনো বিকল্প নেই।’

মার্কিনভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সুশীল সমাজের পরামর্শ গ্রহণের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো সকল প্রতিষ্ঠানে সদস্য ও কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীন তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, দায়মুক্তির অবসান ঘটাতে সরকারকে জবাবদিহিতা ক্ষুণ্ণ করে বা বাধা দেয় এমন আইনগুলো বাতিল বা সংশোধন করতে হবে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘উদাহরণস্বরূপ, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭(১) ধারা বাতিল করা, যে ধারা অনুযায়ী পুলিশ অফিসারসহ দায়িত্বরত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার জন্য সরকারি অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩২ ধারায় যে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করার আগে প্রসিকিউটরদের সরকারি ‘অনুমোদন’ গ্রহণ করতে হয়, একজন রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসব ক্ষেত্রে অনুমতি খুব কমই দেয়া হয়।’

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহারের ক্ষেত্রে দেয়া দায় মুক্তি সংক্রান্ত সশস্ত্র পুলিশ ব্যাটালিয়ন (সংশোধন) আইন ২০০৩-এর ১৩ ধারার ‘সরল বিশ্বাস’ ধারাটি বাতিল করা উচিত।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, ‘সরকারের উচিত শুধু প্রাণঘাতী ঘটনা বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার ঘটনা নয়, বরং বাধ্যতামূলক রিপোর্টিং করার মাধ্যমে বল প্রয়োগের মান প্রবর্তন করা এবং আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর দ্বারা ক্ষমতার ব্যবহারের স্বাধীন পর্যালোচনা করা।

মানবাধিকার সংস্থাটি আরো পরামর্শ দিয়েছে যে- বল প্রয়োগের বিষয়ে পুলিশের আইনগুলো আন্তর্জাতিক মানের হওয়া উচিৎ যার মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের জন্য জাতিসঙ্ঘের আচরণবিধি এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা বল প্রয়োগ ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কিত জাতিসঙ্ঘের মৌলিক নীতিমালা প্রতিফলিত হবে।

এইচআরডব্লিউ আরো বলেছে, ‘এই মানদণ্ড বজায়ে রাখতে পুলিশকে, যতদূর সম্ভব বল প্রয়োগের আগে অহিংস উপায় প্রয়োগ করতে হবে, সেক্ষেত্রে তারা শুধু অপরাধের গুরুত্ব অনুপাতে বল প্রয়োগ করবে এবং প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ শুধু তখনই ব্যবহৃত হবে যখন জীবন রক্ষার জন্য তা কঠোরভাবে অনিবার্য।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement