জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল মসজিদ ছাড়ল সাদপন্থীরা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫২
জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল মসজিদ ছেড়েছে দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। ফলে ফাঁকা হতে শুরু করেছে কাকরাইল মসজিদের আশপাশ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১টার পর অবস্থান ছাড়তে শুরু করে তারা। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে নামাজের প্রস্তুতি নেন তারা।
জুমার আগে আলোচনা করেন সাদপন্থী ইমাম। এ সময় তিনি বলেন, এটিই হলো সাদপন্থীদের সব থেকে বড় জামায়েত। এ সময় আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় মজমার ঘোষণা দেন ইমাম। তিনি জানান, দেশ বিদেশের অনেকে আসবেন ওই মজমায়। আলোচনা হবে তাবলিগ জামায়াতের মেহনত ও সমসাময়িক বিষয়ে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের নভেম্বর দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয়। সেদিন কাকরাইলে দু’দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। চরম বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে তাবলীগ জামাতের বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রক পর্ষদ ‘শূরায়ে নেজাম’ এর অনুসারীরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থীরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। আর মসজিদের অপর অংশে ১২ মাসই ‘শূরায়ে নেজামপন্থীরা থাকেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী তাবলীগ জামাতের মূল নিয়ন্ত্রণ করেন ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন তাবলীগের মুরুব্বী। তাদের সমন্বয়ে যে পর্ষদ গঠিত হয়েছিল, সেটিকে তাবলীগের পরিভাষায় শূরায়ে নেজাম বলা হয়। এই নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একজন সদস্য হলেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী। জ্যেষ্ঠ সদস্যদের তিরোধানের পর ওই পর্ষদে নতুন সদস্যদের দাখিল মানেননি মাওলানা সাদ। এর পরিবর্তে তিনি নিজেকে একক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পান। এর পর থেকেই পর্ষদের অন্য সদস্যদের সাথে তার বিরোধ শুরু হয়। সেখান থেকেই মূলত তাবলীগের এই সঙ্কট শুরু হয়।
পর্ষদের অন্য সদস্যরা মাওলানা সাদকে একক আমির মানতে নারাজ ছিলেন। এর নানাবিধ কারণ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য কারণ হলো, তাবলিগে দ্বিতীয় হজরতজী মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী রহ. শূরায়ে নেজাম চালু করার পর বলেছেন, কাজটি যেহেতু এখন বিশ্বব্যাপী ব্যাপকতা লাভ করেছে, সেজন্য এখন থেকে আর একক নেতৃত্ব না রেখে নিয়ন্ত্রক পর্ষদের অধীনে পরিচালনা করতে হবে। যেন নিয়ন্ত্রণ সুচারু ও যথাযথ হয়। এরপর থেকেই শূরায়ে নেজাম চলে আসছে। এর বিরোধিতা করে একক নেতৃত্ব দাবি করায় মাওলানা সাদের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
এছাড়া এই মেহনত মাওলানা সাদের কাছে নিরাপদ নয় বলে মত দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিত্ব। তার বিচ্ছিন্ন চিন্তাধারার কারণে এ মত প্রকাশ করে ফাতাওয়াও প্রচার করা হয়।