মুখরোচক খাবারে সরগরম লক্ষ্মীবাজারের স্ট্রিট ফুড
- আরিফ হোসাইন
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২
পুরান ঢাকা মানেই নজরকাড়া আর মুখরোচক খাবারের সমারোহ। এসব মুখরোচক খাবারকে ঘিরে জমজমাট হয়ে উঠেছে লক্ষ্মীবাজার। ওই স্বাদ নিতে নানা জায়গা থেকে ভোজনপ্রেমীরা ভিড় জমান পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের খাবারের দোকানগুলোতে।
আর তাই দেখা যাবে, কেউ দাঁড়িয়ে খাবার খাচ্ছেন, কেউবা বসে। আবার কেউ খাবারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। কী নেই এসব স্ট্রিট ফুডের দোকানে! কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে শুরু করে সোহরাওয়ার্দী কলেজ পর্যন্ত ভাজা-পোড়া, ফুচকা, চটপটি জিলাপি, চিজ-বার্গার, ফ্রাই-পিৎজা, চা-কফি, জুস-চিপস, কাবাব, হরেক রকমের পিঠা আর আচারের দোকানে সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় লেগে থাকে। সব বয়সের লোক আসছে এ খাবার খেতে। এই রাস্তায় শ'খানেক দোকানে হরেক রকম খাবার তৈরি করা হয়। সড়কের দু‘পাশেই বসা খাবারের দোকানগুলো তাদের খাবারের মূল্য ঝুলিয়ে রেখেছে।
সুলতানি, মোগল, নবাবি, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের ইতিহাস থেকে পুরান ঢাকার মেন্যুতে যোগ হয়েছে এসব খাবার। কাবাব, বিরিয়ানির পাশাপাশি রাস্তায় বিক্রি হওয়া এই খাবারগুলোও সমানভাবে জনপ্রিয়। এই খাবারগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো খুব কম দামে পাওয়া যায়। তবে স্বাদে ও মানে যেকোনো নামকরা হোটেলকেও হার মানাবে।
শীতে এখানের স্ট্রিট ফুডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা এখন ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠার। এসবের পাশাপাশি ভুট্টা, ঝালমুড়ি, পানিপুরি, রোল, বিভিন্ন ধরনের চপ ও ভাজাপোড়া খাবারের চাহিদা বেড়েছে। শীতের মৌসুমে ভাজাপোড়া খাবারের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে কড়াই থেকে নামানো গরম গরম চপ ও অন্যান্য খাবার খেতে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
এখানকার খাবার খেতে এসে জবি শিক্ষার্থী কারিনা দত্ত বলেন, পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে ফাস্টফুডের খাবারের দাম কম, তবে অনেক সুস্বাদু। প্রায়ই বন্ধুদের সাথে এখানে খেতে আসি। ফুচকা, পানিপুরি আমার অনেক প্রিয়। চিতই পিঠা ও নানা রকমের ভর্তা এখানে পাওয়া যায়। এসব খেতে হুটহাট চলে আসি।
এক চটপটি দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানের কাস্টমার বেশিভাগ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভিড় বেশি থাকে। শীতকালে কাস্টমার বেশি থাকে। এখানে এখন নানা ধরনের ফুড ব্লগাররাও আসেন। খাবারের প্রশংসা করে ভিডিও বানান। এগুলো আমাদের আরো ভালো লাগে। সুন্দর পরিবেশে খাবার দেয়ার চেষ্টা করি।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে খাবারের স্বাদ মেটাতে আসেন। বিশেষ করে লক্ষ্মীবাজারের আশেপাশে বেশ কিছু প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মহানগর মহিলা কলেজ, সেন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট থমাস স্কুলসহ বেশকিছু ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আবাসিক হল না থাকার সংকটে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এখানে খাবার খেতে আসেন।