ওয়াশিংটন সফরে নেতানিয়াহু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৩:৫৬
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার বিকেলে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন। তিনি হাজির হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ময়দান থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেকে প্রত্যাহারের এক দিন পর।
গাজা যুদ্ধের অত্যন্ত সঙ্কটময় মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সম্পর্ককে অনিশ্চয়তায় ফেলেছে বাইডেনের আকস্মিক এই সিদ্ধান্ত।
গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ছাড়াই জুন মাসে নেতানিয়াহু যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঘোষণা করায় অনেকে এই সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বর্তমানে আমেরিকার রাজনীতিতে পালাবদলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইসরাইল চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসনের কাছে নিজেদের অবস্থান আরো মজবুত করা।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা ধারণা করছেন বাইডেন ও নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার ওয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করবেন।
ইসরাইল ছাড়ার সময় নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আমি দুই দলেরই সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করব যা ইসরাইলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকার জনগণ তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাকেই নির্বাচন করুক না কেন, ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার অপরিহার্য ও জোরালো মিত্র হয়েই থাকবে।’
ইসরাইলের বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জোনাথন রাইনহোল্ড বলেন, ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্ভাব্য লড়াইয়ে নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছেন বলে মনে হলেও তিনি কাকে সমর্থন করছেন বা চাইছেন তা নিয়ে একটু সংশয় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে রিপাবলিকানরা ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে বেশিই সমর্থন করেন। ইসরাইলের কট্টরপন্থী সরকার ও ফিলিস্তিন বিষয়ে ইসরাইলের নীতির প্রতিই তারা বেশি সহানুভূতিশীল।’
মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের ইসরাইলি অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সিনিয়র গবেষক নিমরোদ গরেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ পাওযার অনুরোধ করছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তার মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন করতেই তার এই উদ্যোগ।
২০২০ সালে বাইডেন নির্বাচনে জয়ী হলে নেতানিয়াহু তাকে শুভেচ্ছা জানালে ট্রাম্প অসন্তুষ্ট হন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইসরাইলকে শান্তিতে ফিরতে ও মানুষ হত্যা বন্ধ করতে সতর্কও করেছেন।
নেতানিয়াহু সাক্ষাতের জন্য ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন কিনা সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের প্রচারণা বিভাগকে প্রশ্ন করেও জবাব মেলেনি।
হ্যারিসের সহযোগী বলেছেন, চলতি সপ্তাহে হ্যারিস ওয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। বাইডেনের সাথে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত সাক্ষাৎ থেকে এটি আলাদা।
তিনি আরো বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট তার পুরো কর্মজীবনে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন।’
হ্যারিসের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ ও মজবুত সম্পর্ক রয়েছে। তার স্বামী তথা সেকেন্ড জেন্টলম্যান ডাও এমহফ ইহুদি এবং ইহুদি-বিদ্বেষ মোকাবেলায় প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
গরেন বলেন, ইসরাইলের নেসেটে তিন মাসের বিরতি আসছে। ঘরোয়া রাজনৈতিক বিষয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই নেতানিয়াহুর লক্ষ্য এবং সেই সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে।
সূত্র : ভিওএ