১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাফায় হামলা বন্ধ করতে ইসরাইলকে আইসিজের নির্দেশ

হেগে বিশ্ব আদালতের সামনে দুই ব্যক্তিকে ফিলিস্তিনি পতাকা দোলাতে দেখা যায় - ছবি : সংগৃহীত

গাজার রাফা এলাকায় হামলা বন্ধ করতে ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে জাতিসঙ্ঘের আদালত। আজ শুক্রবার এই আদেশ দেয়া হয়। এতে জাতিসঙ্ঘের যেকোনো তদন্ত কমিশনের গাজায় যাওয়া নিশ্চিত করার জন্যও ইসরাইলের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এই আদেশ ইসরাইলের জন্য কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

১৫ সদস্যের বিচারক প্যানেল ১৩-২ ভোটে এই রায় দেয়। রাফায় অভিযান বন্ধের পক্ষে ভোট পড়ে ১৩টি, বিপক্ষে পড়ে ২টি। যে দুজন বিপক্ষে ভোট দেন তারা হলেন আদালতে উগান্ডার প্রতিনিধি জুলিয়া সেবুতিনদে এবং ইসরাইলের প্রতিনিধি আহারন বারাক।

গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান বন্ধ করার আদেশ দিতে বিশ্ব আদালতের প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনের পেক্ষাপটে আজ শুক্রবার এই রায় দেয়া হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযোগ করেছে, গাজায় ইসরাইল 'গণহত্যা' চালাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে (আইসিজে) অবিলম্বে রাফাসহ গাজায় হামলা বন্ধ করতে আদেশ দিয়ে অনুরোধ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আইসিজের প্রধান নওয়াফ সালাম তার রায়ে বলেন, 'গণহত্যার অভিযোগ দতন্তে জাতিসঙ্ঘে যোগ্য সংস্থার যেকোনো তদন্ত কমিশন, তথ্যানুসন্ধান মিশন বা তদন্ত সংস্থার অবাধে গাজায় প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য ইসরাইলকে অবশ্যই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।'

তিনি আরো বলেন, গাজার ব্যাপারে আইসিজের আগের রায়ের পর ইসরাইলের গ্রহণ করা প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরোপুরি সামাধান করা হয়নি।

আইসিজে এক মাসের মধ্যে অগ্রগতির ব্যাপারে আদালতকে অবহিত করার জন্যও ইসরাইলের প্রতি নির্দেশ জারি করে।

আদালত মানবিক সহায়তার জন্য রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দিতে ইসরাইলকে নির্দেশ দেয়।

আইজিসে রায়ে আরো জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি গাজার জনসাধারণের অধিকারের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আদারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, আট লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের নিরাপদে এবং মানবিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলে ইসরাইলের কথায় তিনি বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, এর কোনো প্রমাণ নেই। আর এ কারণেই আদালত কঠিনভাবে নির্দেশ দিচ্ছে যে ইসরাইলকে অবিলম্বে রাফায় সামরিক আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।

এই আদালত হলো জাতিসঙ্ঘের সর্বোচ্চ সংস্থা। এই সংস্থা বিভিন্ন দেশের মধ্যকার বিবাদ শোনে। এর রায় চূড়ান্ত এবং পালন করা বাধ্যতামূলক। তবে অতীতে এই আদালতের রায় অগ্রাহ্য করা হয়েছে। আদালতের তার রায় কার্যকর করার কোনো ক্ষমতা নেই।

তবে এই রায ইসরাইলের ওপর আরো কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আরো কোণঠাসা হয়ে পড়বেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট এবং তিন হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। উল্লেখ্য, আইসিসি এবং আইসিজে আলাদা সংস্থা। তবে সংস্থা দুটির কার্যালয়ই হেগে।

সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি এবং অন্যান্য


আরো সংবাদ



premium cement