গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানালেন জাতিসঙ্ঘ প্রধান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৫২
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দী চুক্তির ঘোষণাকে বুধবার স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
চুক্তিটি রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হবে।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব সংবাদদাতাদের বলেন, ‘আমি মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের এই চুক্তি সম্ভব করার লক্ষ্যে তাদের নিবেদিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি। একটি কূটনৈতিক নিস্পত্তি খুঁজে পেতে তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতি এই অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকে বহাল রাখতে এবং এই চুক্তি যেন সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের সাথে এই মধ্যস্থতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-সানি। তিনি দোহায় সংবাদদাতাদের বলেন, এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ ৪২ দিনের। এই সময়ের মধ্যে হামাস ৩৩ জন পণবন্দীকে মুক্তি দেবে যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার সময় থেকে হামাসের হাতে বন্দী রয়েছে। এর পরিবর্তে ইসরাইলও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেবে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম পর্যায়টি বাস্তবায়িত হওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত বিষয়টি সম্পর্কে সম্মতি পাওয়া যাবে।
১৫ মাস আগে হামাসের আক্রমণের ফলে এই সংঘাত শুরুর সময় থেকেই জাতিসঙ্ঘের প্রধান যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দীদের মুক্তির দাবি করে আসছেন। এই সংঘাত গাজার ২০ লাখেরও বেশি অধিবাসীর জন্য মারাত্মক মানবিক সংকট তৈরি করেছে। সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গাজায় ৪৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরো হাজার হাজার লোক আহত হয়েছেন।
গুতেরেস বলেন, ’আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে এই সংঘাতে যে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার প্রশমন করা। জাতিসঙ্ঘ এই চুক্তি বাস্তবায়নকে সমর্থন দিতে এবং দুর্ভোগের শিকার অসংখ্য ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক ত্রাণ বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত।’
মানবিক সাহায্য
চুক্তির প্রথম পর্যায়ে প্রতিদিন গাজায় ৬০০ ট্রাক মানবিক সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গুতেরেস বলেন, গাজাজুড়ে ত্রাণ বিতরণ বৃদ্ধি করার জন্য উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা জরুরি।
মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আমরা তাই-ই করবো যা মানবিকভাবে সম্ভব, এটা জেনেও যে আমরা গুরুতর চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবো। আমরা আশা করি আমাদের এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্য মানবিক সংগঠন, বেসরকারি ক্ষেত্র ও দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগও এ ধরনের প্রচেষ্টা চালাবে।’
গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক সমাজ যেন ভুলে না যায় বৃহত্তর লক্ষ্যের কথা। তা হলো, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দু’টি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা।
তিনি বলেন, ‘আমি সকল পক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে ফিলিস্তিনি, ইসরাইলি ও ব্যাপকতর অঞ্চলের জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ সৃষ্টির সুযোগ গ্রহণ করতে। দখলদারিত্ব শেষ করে এবং আলোচনার মাধ্যমে দু’টি রাষ্ট্র সমাধানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসঙ্ঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও আগের সমঝোতা অনুযায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সৃষ্টি এখন জরুরি অগ্রাধিকারের বিষয়।’
সূত্র : ভিওএ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা